
নিজস্ব প্রতিবেদক, বরিশাল: পটুয়াখালীর বাউফলে বর্ষা মৌসুমে উচু জমিতে মালচিং পদ্ধতিতে তরমুজ চাষ করে সফলতা পেয়েছেন তরুণ কৃষি উদ্যোক্তা মো. লোকমান হোসেন। কম খরচে বেশি ফলন ও বাজার দাম ভালো দাম পাওয়ায় খুশি এ চাষী। তার এ সাফল্য দেখে অনেকেই অফ সিজনে তরমুজ চাষে আগ্রহী হয়ে উঠছেন। উপজেলার চন্দ্রদ্বীপ ইউনিয়নের চরওয়াডেল গ্রামের বাসিন্দা লোকমান হোসেন।
৮ বছর আগে শিক্ষিত এ তরুণ কর্মের খোঁজে প্রবাসে চলে যান। তিন বছর আগে দেশে ফিরে বাবার সাথে শুরু করেন কৃষি কাজ।সাধারণত গ্রীষ্ম মৌসুমে তরমুজের আবাদ হয়ে থাকে। তবে বর্ষা মৌসুমে প্রথম বারের মত বাড়ি আঙ্গিনায় সল্প জমিতে তরমুজের আবাদ করেন। পাশাপাশি কিছু ফুটি আবাদ করেন। প্রথম বারের ই কম খরচে সফল হয়েছেন তিনি।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, মালচিং পদ্ধতিতে সারিসারি তরমুজ গাছ লাগানো। ঝাকায় এসব গাছ লতাপাতা ছড়িয়ে রয়েছে। ফল ফুলে ভরপুর গাছগুলো। পাতার ফাঁকে ফাঁকে উকি দিয়ে আছে রসালো ফল তরমুজ। পাশে রয়েছে ফুটি গাছ। তাতেও বেশ ভালো ফলন হয়েছে। গাছ পরিচর্যা করছেন চাষী লোকমান। তাকে সহায়তা করছেন তার বাবা।
তরুণ চাষী লোকমান জানান, কর্মের জন্য ২০১৭ সালে ব্রæনাই চলে গিয়ে ছিলাম। সেখানে যে কাজ করছিলাম তা অনেক পরিশ্রমের। তার চেয়ে কম পরিশ্রম কৃষিকাজে দিলে অধিক মুনফা অর্জণ করা যায়। যে কারণে বিদেশ থেকে ফিরে বাবার সাথে কৃষি কাজ শুরু করি। ধান চাষের পাশাপাশি বাড়ির পাশে পতিত জমিতে বিভিন্ন সবজি ফলমূল চাষাবাদ শুরু করি।
এ বছর পরীক্ষা মুলক ভাবে ৫শতক জমিতে হাইব্রিড জাতের তরমুজ ও ফুটি আবাদ করেছি। প্রথমবারের ভালো ফল হয়েছে। বর্ষা মৌসুমে পোকা মাড়কের আক্রমণ কম থাকায় কীটনাশক খরচও কম হয়েছে। সেই তুলনায় লাভ বেশি হয়েছি। মাত্র ২০ হাজার টাকা খরচ করে প্রায় ১লাখ টাকার ফলন হয়েছে। লোকমানের বাবা সালাম গাজী জানান, আমি ছোট বেলা থেকে কৃষি কাজ করে আসছি।
পড়াশুনা সে করে ছেলে বিদেশ গিয়েছিলেন। তবে সেখানে গিয়ে ভালো কিছু করতে পারছিল না। যেকারণে চলে এসে আমার সাথে কৃষি কাজ শুরু করে। এবছর তরমুজ চাষ করে ভালো ফলন পেয়েছে। আগামীতে আরও বেশি জমিতে তরমুজ চাষ করার ইচ্ছে রয়েছে। এদিকে তরুণ এ চাষীর অসময়ে তরমুজ চাষের খবর চারদিকে জড়িয়ে পরলে দুরদুরান্ত থেকে মানুষ দেখতে আসছেন। তার এমন সাফল্য দেখে স্থানীয় বেকার ও তরুণ চাষীরা অসময় তরমুজ চাষে উদ্বুদ্ধ হচ্ছে।
স্থানীয় চাষী মো. রিপন হোসেন (৩২) বলেন, আমরা কৃষি কাজ করি। মৌসুমে তরমুজ চাষাবাদ করে থাকি। কিন্তু বর্ষা মৌসুমেও তরমজু চাষ করা যায় তাই এই প্রথম দেখলাম। আগামীতে আমিও বর্ষা মৌসুমে চাষাবাদ করব। এবিষয়ে বাউফল উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মো. মিলন বলেন, অসময়ে তরমুজ অনেক লাভজনক।
এসময়ে বাজারে তরমুজের ব্যাপক চাহিদা থাকে। রোগ বালাই কম থাকায় খরচ কম, লাভ বেশি হয়। যেকারণে কৃষকরা অসময়ে তরমুজ চাষাবাদ করে থাকেন। প্রথম বারের মত এ উপজেলা তরুণ কৃষি উদ্যোক্তা তরমুজ চাষ করেছেন। তার সফলতার খবরে আমরা আনন্দিত। তাকে কৃষি বিভাগ থেকে সব ধরনের সহায়তা করা হবে। আমরা তার পাশে থাকব।