
পাথরঘাটা প্রতিনিধি// বরগুনার পাথরঘাটা উপজেলার কালমেঘা ইউনিয়নে স্ত্রী কৈতুরী হত্যার অভিযোগে স্বামী হানিফ মিয়াকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
রোববার দুপুরে খাগড়াছড়ি থেকে অভিযান চালিয়ে তাকে আটক করা হয়।
পারিবারিক সূত্র জানায়, কৈতুরী ও হানিফ দুজনেই গারমেন্টসে চাকরির সুবাদে পরিচিত হন এবং পরবর্তীতে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। পরিবারের আপত্তি সত্ত্বেও কৈতুরীর আবদারে দুই পরিবার তাদের বিয়েতে সম্মতি দেয়। বিয়ের প্রথম বছর সুখের সংসার কাটলেও, কন্যা সন্তানের জন্মের পর হানিফ অনলাইন জুয়ায় আসক্ত হয়ে পড়েন।
টাকার প্রয়োজনে হানিফ কৈতুরীর কাছে যৌতুক দাবি করতে থাকেন। পরিবার থেকে তা না পাওয়ায় শুরু হয় শারীরিক নির্যাতন। প্রায় প্রতিদিনই কৈতুরীকে মারধর করতেন হানিফ। প্রতিবেশীরা একাধিকবার বাধা দিলেও তিনি কারও কথা শোনেননি। ভাঙন এড়াতে কৈতুরী বাবা-মায়ের কাছে কিছু জানাতেন না।
এরপর ১১ সেপ্টেম্বর ফের নির্মম নির্যাতনের শিকার হন কৈতুরী। এক প্রতিবেশী যুবক গোপনে ভিডিও ধারণ করেন, যেখানে দেখা যায় হানিফ কীভাবে স্ত্রীকে মারধর করছেন। গুরুতর আহত অবস্থায় কৈতুরীকে পাথরঘাটা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। ঘটনার পরপরই হানিফ পালিয়ে যান।
পরবর্তীতে জানা যায়, হানিফ একে একে সাতটি বিয়ে করেছেন। এ ঘটনার পর কৈতুরীর বড়ো ভাই বাদী হয়ে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। তবে দীর্ঘ ১৭ দিন ধরে গ্রেপ্তার এড়িয়ে চলছিলেন হানিফ।
পাথরঘাটা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মেহেদী হাসান জানান, আসামিকে ধরতে পুলিশ সর্বাত্মক চেষ্টা চালিয়ে আসছিল এবং অবশেষে আজ তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। পাশাপাশি তিনি জানান, অনলাইন জুয়া নিয়ন্ত্রণে বিশেষ অভিযান পরিচালনা করা হবে।
স্থানীয়রা বলছেন, এটি শুধুমাত্র একটি হত্যাকাণ্ড নয়, বরং অনলাইন জুয়া, যৌতুকের দাবি ও নারী নির্যাতনের এক ভয়াবহ উদাহরণ। এ ঘটনা সমাজে ন্যায়বিচার ও নিরাপত্তার ঘাটতি আবারও স্পষ্ট করে তুলেছে।