1. diggilseba@gmail.com : admin :
  2. ashadul@barisalcrimetrace.com : Ashadul Islam : আসাদুল ইসলাম
  3. hafiz@barisalcrimetrace.com : barisal CrimeTrace : barisal CrimeTrace
  4. mahadi@barisalcrimetrace.com : মাহাদী হাসান : মাহাদী হাসান
পাশে কেউ নেই, হাসপাতালে মৃত্যুর সঙ্গে লড়ছেন সাথী - Barisal Crime Trace । বরিশাল ক্রাইম ট্রেস
বৃহস্পতিবার, ২০ নভেম্বর ২০২৫, ০২:০৯ পূর্বাহ্ন

পাশে কেউ নেই, হাসপাতালে মৃত্যুর সঙ্গে লড়ছেন সাথী

  • আপডেট সময় : সোমবার, ৩ নভেম্বর, ২০২৫

নিজস্ব প্রতিবেদক : মাত্র দুই বছর বয়সে মা-বাবার বিচ্ছেদ। এর পর পালিত পরিবারে বড় হওয়া। আবার সেই পরিবারের সঙ্গেও সম্পর্কের অবসান- এভাবেই জীবনের প্রতিটি অধ্যায়ে দুঃখ আর বঞ্চনার গল্পে জড়িয়ে পড়েছেন ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার সালন্দর ইউনিয়নের চৌধুরীহাট বন্দিকাটা গ্রামের ইসরাত জাহান সাথী। বর্তমানে তিনি ঠাকুরগাঁও ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের একটি বেডে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছেন।

 

সাথীর বয়স এখন ৩২ বছর। যখন তার বয়স মাত্র দুই বছর, তখন পারিবারিক কলহের কারণে তার মা বাবার বাড়ি চলে যান। পরে বাবা-মায়ের বিচ্ছেদ হয়। এর পর পরিবারের সিদ্ধান্তে ছোট্ট সাথীকে তুলে দেওয়া হয় সদর উপজেলার হাজীপাড়ার বিলকিস বেগমের হাতে। বিলকিস বেগম পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের কর্মচারী ছিলেন। তার পরিবারেই বড় হয়ে ওঠেন সাথী।

 

 

২০১২ সালে পালিত মা-বাবার পছন্দে তার বিয়ে হয়। সংসারে এক ছেলে ও এক মেয়েসন্তান রয়েছে। কিন্তু স্বামীর সঙ্গে বন্ধন ভালো ছিল না- কলহ লেগেই থাকত। পরে তার পরিচয় হয় ভাঙাড়ি ব্যবসায়ী রুবেল হোসেনের (৩৫) সঙ্গে। রুবেলের প্রেমে পড়ে শান্তির খোঁজে নতুন করে সংসার শুরু করেন সাথী। কিন্তু কিছুদিনের মধ্যেই জানতে পারেন, রুবেল মাদকাসক্ত এবং অন্য এক নারীর সঙ্গে প্রেমের সম্পর্কে জড়িত। এ ঘটনায় মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন তিনি।

 

 

চরম হতাশায় গত মাসের শুরুতে নিজের শরীরে পেট্রোল ঢেলে আগুন ধরিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন সাথী। স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে ঠাকুরগাঁও ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করেন। তার শরীরের প্রায় ৭০ শতাংশ পুড়ে গেছে। ২৫ দিন ধরে তিনি হাসপাতালের বিছানায় যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছেন। উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে রেফার্ড করা হলেও অর্থের অভাবে এখনো যেতে পারেননি তিনি।

 

 

হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, সাথীর পাশে কেউ নেই। দেখভালের মতো কেউ এগিয়ে আসেনি। কখনো কখনো পাশের বেডের রোগীরাই তাকে পানি খাওয়াচ্ছেন, খাবার দিচ্ছেন। একই ওয়ার্ডের রোগী পীরগঞ্জের হালিমা খাতুন বলেন, ‘ওর পাশে কেউ আসে না। অনেক সময় না খেয়ে থাকে। আমরা মাঝে মাঝে ভাত বা খাবার দিয়ে দিই।’ আরেক রোগী রহিমা বেগম বলেন, ‘ও খুব কষ্টে আছে। ও খুবই একা। তাই মায়া লাগে।

 

 

দ্বিতীয় বিয়ের পর থেকে নিজের মা ও পালিত মা দুজনেই সাথীর খোঁজ নিচ্ছেন না বলে অভিযোগ তার। সাথী বলেন, ‘আমার কপালে সুখ নেই। কেউ আমার পাশে নেই। মরে গেলেও কেউ খবর রাখবে না।

 

 

পালিত মা বিলকিস বেগমের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘সে (সাথী) তিন বছর আগে আমার কাছ থেকে চলে গেছে নিজের মায়ের কাছে। এখন তার খোঁজ নেওয়ার কোনো প্রয়োজন দেখি না।’ অন্যদিকে জন্মদাতা মা মোছা বেগম বলেন, ‘আমার এখন নিজের সংসার আছে। তার কাছে যেতে পারব না।

 

 

সাথীর গ্রামের প্রতিবেশী জাহিদুল ইসলাম বলেন, ‘ছোটবেলা থেকেই মেয়েটা অনেক কষ্ট করেছে। এখন হাসপাতালে একা পড়ে আছে, এটা জানার পর খুব খারাপ লাগছে। কেউ তার পাশে নেই- এটাই সবচেয়ে কষ্টের।’ একই এলাকার নারী রুবিনা বেগম বলেন, ‘সাথীর জীবনটা দুঃখে ভরা। এখন সে মৃত্যুর সঙ্গে লড়ছে, আমরা চাই সমাজের মানুষ যেন তাকে সাহায্য করে।

 

 

ঠাকুরগাঁও ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের সমাজসেবা কর্মকর্তা আরশান মোর্শেদ বলেন, ‘আমরা সাথীর পুষ্টিকর খাবারের ব্যবস্থা করেছি। প্রয়োজনে ওষুধের ব্যবস্থাও করা হবে। বিষয়টি আগে জানতাম না, এখন থেকে সমাজসেবা বিভাগ তার পাশে থাকবে।

 

 

 

ঠাকুরগাঁও সিভিল সার্জন ডা. আনিসুর রহমান বলেন, ‘আমরা বিষয়টি অবগত হয়েছি। চিকিৎসার ক্ষেত্রে আমাদের পক্ষ থেকে সর্বোচ্চ সহযোগিতা করা হবে।

পোস্টটি সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

এই ক্যাটাগরির আরও নিউজ
© All rights reserved © 2025 Barisal Crime Trace
Theme Customized By Engineer BD Network