মিল্টন কবিরাজ : তরুণ প্রজন্মের কর্মসংস্থান, দক্ষতা উন্নয়ন ও উদ্যোক্তা সৃষ্টির লক্ষ্যে বরিশালে অনুষ্ঠিত হলো ‘তারুণ্যের উৎসব ২০২৫’। গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের আওতাধীন পল্লী কর্ম-সহায়ক ফাউন্ডেশন (পিকেএসএফ) এবং বিশ্বব্যাংক (The World Bank)-এর যৌথ অর্থায়নে বাস্তবায়নাধীন Recovery and Advancement of Informal Sector Employment (RAISE) প্রকল্পের আওতায় আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে তরুণদের আত্মনির্ভরতা, উদ্ভাবন ও উদ্যোগী মানসিকতা বিকাশে গুরুত্বারোপ করা হয়।

সোমবার (১০ নভেম্বর ২০২৫) সকালে পিকেএসএফ অংশীদার প্রতিষ্ঠান বিডিএস-এর প্রধান কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত হয় এ তরুণ উদ্যোক্তা সমাবেশ। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন মো. আহসান কবীর, অতিরিক্ত সচিব, আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ।

বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মুহাম্মদ আমিন শরীফ, উপসচিব, আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ। অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন দিলীপ কুমার চক্রবর্তী, মহাব্যবস্থাপক (কার্যক্রম) ও প্রকল্প সমন্বয়কারী, রেইজ প্রকল্প, পিকেএসএফ। সঞ্চালনা করেন গোলাম জিলানী, ব্যবস্থাপক (কার্যক্রম) ও উপ-প্রকল্প সমন্বয়কারী, রেইজ প্রকল্প, পিকেএসএফ।

প্রধান অতিথি তাঁর বক্তব্যে বলেন, “দেশের অর্থনৈতিক অগ্রযাত্রায় তরুণদের সম্পৃক্ততা এখন সময়ের দাবি। অনানুষ্ঠানিক খাতে কর্মসংস্থান সৃষ্টি এবং ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের ক্ষমতায়ন ছাড়া টেকসই উন্নয়ন সম্ভব নয়।” বিশেষ অতিথি মুহাম্মদ আমিন শরীফ বলেন,“রেইজ প্রকল্প শুধু কর্মসংস্থানের সুযোগই তৈরি করছে না, এটি তরুণদের আর্থিক ও সামাজিকভাবে স্বাবলম্বী হওয়ার পথে সহায়ক ভূমিকা রাখছে।”

সভাপতির বক্তব্যে দিলীপ কুমার চক্রবর্তী বলেন,“পিকেএসএফ সবসময় দেশের তরুণ প্রজন্মকে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে যুক্ত করতে কাজ করে যাচ্ছে। ভবিষ্যতে এই প্রকল্পের আওতা আরও বিস্তৃত করার পরিকল্পনা রয়েছে, যাতে দেশের প্রতিটি অঞ্চলের তরুণ উদ্যোক্তারা উপকৃত হতে পারেন।” অনুষ্ঠানে বরিশাল অঞ্চলের প্রায় শতাধিক তরুণ উদ্যোক্তা অংশ নেন। তাঁরা নিজেদের উদ্যোক্তা হওয়ার অভিজ্ঞতা, ব্যবসায়িক চ্যালেঞ্জ ও সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনা করেন।

পাশাপাশি প্রকল্পের বিভিন্ন কার্যক্রম ও প্রশিক্ষণ কর্মসূচি সম্পর্কে ধারণা লাভ করেন। বক্তারা বলেন, বাংলাদেশের অর্থনীতির একটি বড় অংশ অনানুষ্ঠানিক খাতের ওপর নির্ভরশীল। তাই এই খাতের উদ্যোক্তাদের প্রযুক্তিগত প্রশিক্ষণ, আর্থিক সহায়তা ও বাজার সম্প্রসারণের সুযোগ বাড়াতে পারলে দেশের সামগ্রিক উন্নয়ন আরও গতিশীল হবে।

অনুষ্ঠানে অতিথিবৃন্দ তরুণ উদ্যোক্তাদের হাতে তৈরি নানা পণ্য ও উদ্ভাবনী উদ্যোগ পরিদর্শন করেন। সমাপনী পর্বে সফল উদ্যোক্তারা নিজেদের অভিজ্ঞতা ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা তুলে ধরেন।

অংশগ্রহণকারীরা মত দেন, তরুণদের আত্মনির্ভরতা ও উদ্ভাবনী শক্তি বৃদ্ধির এই আয়োজন বরিশাল অঞ্চলে কর্মসংস্থান সৃষ্টির নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেছে। উল্লেখ্য, রেইজ প্রকল্পের মাধ্যমে সারাদেশে প্রায় ৭৩ হাজার বেকার তরুণকে ‘গুরু-শিষ্য পদ্ধতিতে’ শিক্ষানবিস প্রশিক্ষণ প্রদান এবং প্রায় দেড় লক্ষাধিক পিছিয়ে পড়া তরুণ উদ্যোক্তাকে সক্ষমতা বৃদ্ধিমূলক প্রশিক্ষণ ও সরকার নির্ধারিত সার্ভিস চার্জের চেয়ে হ্রাসকৃত হারে অর্থায়ন করা হচ্ছে।