
নিজস্ব প্রতিবেদক : কার্যক্রম নিষিদ্ধ হওয়া আওয়ামী লীগের ঘোষিত ‘ঢাকা লকডাউন’ কর্মসূচি (১৩ নভেম্বর) ঘিরে বরিশালে নেওয়া হয়েছে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা। যেকোনো নৈরাজ্য, সহিংসতা বা নাশকতা ঠেকাতে নগরজুড়ে পুলিশের পাশাপাশি সেনাবাহিনী ও র্যাবের টহল জোরদার করা হয়েছে।
বুধবার (১২ নভেম্বর) সন্ধ্যা থেকে গভীর রাত পর্যন্ত নগরীর গুরুত্বপূর্ণ মোড় ও প্রবেশপথে চেকপোস্ট বসিয়ে সন্দেহভাজন ব্যক্তি ও যানবাহনে তল্লাশি চালায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।
পুলিশ, র্যাব ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা সজোয়া যান নিয়ে মহড়াও পরিচালনা করছেন। নগরীর রূপাতলী, নথুল্লাবাদ কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল, লঞ্চঘাট, কাশিপুর বাজারসহ জনবহুল এলাকায় পুলিশি উপস্থিতি বাড়ানো হয়েছে।
বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশ (বিএমপি) কমিশনার শফিকুল ইসলাম বলেন, “টহল কার্যক্রম নিয়মিত বিষয় হলেও ১৩ নভেম্বর ঘিরে তা আরও জোরদার করা হয়েছে। সন্ধ্যার পর থেকে রাত্রিকালীন মহড়া চলছে। পাশাপাশি লঞ্চঘাট, রূপাতলী, নথুল্লাবাদ, কাশিপুর ও অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ স্থানে গোয়েন্দা টিম ভাগ করে দেওয়া হয়েছে। সিটিএসবি টিমও পুরো মহানগরে কাজ করছে।
তিনি আরও জানান, নিরাপত্তা জোরদারের অংশ হিসেবে নগরীর তিনটি প্রধান প্রবেশদার—কালিজিরা ব্রিজ, গড়িয়ারপাড় এবং দপদপিয়া এলাকায় চেকপোস্ট বসানো হয়েছে। এছাড়া বরিশাল–ঢাকা মহাসড়কের নতুন হাট, কাশিপুর, আমতলার মোড় এবং সদর রোডেও চেকপোস্টের মাধ্যমে তল্লাশি চলছে।
পুলিশ কমিশনার শফিকুল ইসলাম আরও বলেন, “নিরাপত্তা জোরদারের পাশাপাশি সন্দেহভাজনদের গ্রেপ্তার অভিযানও চলছে। সম্প্রতি ১৩ নভেম্বর ঘিরে নাশকতার পরিকল্পনার সুনির্দিষ্ট তথ্যের সূত্র ধরে কাশিপুর এলাকা থেকে মিন্টু নামের নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ কর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অপর সহযোগীকে ধরতে অভিযান চলছে।
বিএমপি সূত্রে জানা গেছে, গ্রেপ্তার মিন্টু বরিশাল সিটি করপোরেশনের (বিসিসি) সাবেক কাউন্সিলর লিটন মোল্লার ঘনিষ্ঠ সহযোগী। পূর্বে সে কাশিপুর এলাকায় মশাল মিছিলেও অংশ নিয়েছিল বলে জানিয়েছেন মেট্রোপলিটনের এয়ারপোর্ট থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আল মামুন উল ইসলাম।
এদিকে, সাদা পোশাকধারী ও গোয়েন্দা (ডিবি) সদস্যদেরও নগরীর বিভিন্ন পয়েন্টে মোতায়েন করা হয়েছে। আগ্নেয়াস্ত্র বা বিস্ফোরক দ্রব্য যাতে কেউ বহন করতে না পারে সে বিষয়ে কড়া নজরদারি চলছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
নিরাপত্তা বাহিনীর এমন প্রস্তুতিতে নগরীতে কিছুটা আতঙ্ক থাকলেও, সাধারণ মানুষ বলছেন—“নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার হওয়ায় স্বস্তিতে আছি, তবে অযথা হয়রানি না হলে ভালো হয়।