
নিজস্ব প্রতিবেদক, বরিশাল: ‘চাঁদার টাকা না দেওয়ায়’ ইউনিয়ন পরিষদের প্রশাসনিক কর্মকর্তা ও বিএনপি নেতাদের যোগসাজশে নোয়াখালীর হাতিয়ার নিঝুম দ্বীপ ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ে তালা লাগিয়ে কার্যক্রম বন্ধ করে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এতে ব্যাহত হচ্ছে স্থানীয় নাগরিক সেবা। ইতোমধ্যে ঘটনা তদন্তে একটি কমিটি গঠন করেছে উপজেলা প্রশাসন।
রোববার (২৭ জুলাই) দিবাগত রাতে বিষয়টি নিশ্চিত করেন নিঝুম দ্বীপ ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) প্যানেল চেয়ারম্যান লাভলী বেগম। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর চেয়ারম্যান ও সদস্যরা পরিষদে আসা বন্ধ করে দেন। পরে সরকার আমাকে গেজেটের মাধ্যমে প্যানেল চেয়ারম্যানের দায়িত্ব দেয়। দায়িত্ব নেওয়ার পর আমি সব রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সমন্বয় করে পরিষদের কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছিলাম।
তবে সম্প্রতি নিয়োগ পাওয়া প্রশাসনিক কর্মকর্তা হারুন অর রশিদ লিমনের বিরুদ্ধে চাঁদা দাবির অভিযোগ তোলেন তিনি। লাভলী বেগম দাবি করে বলেন, যোগদানের পর থেকে লিমন স্থানীয় কয়েকজন বিএনপি নেতার সঙ্গে যোগসাজশ করে বরাদ্দের নামে আমার কাছ থেকে ৫ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন।
চাঁদা দিতে অস্বীকৃতি জানালে গত বুধবার বিএনপির নেতা মো. ইব্রাহিম, সাবেক মেম্বার মো. শাহেদ উদ্দিন, যুবদল নেতা আশরাফ উদ্দিন ও অন্যরা আমাকে পরিষদে যেতে নিষেধ করেন। সেদিন আমি পরিষদ ত্যাগ করলে তারা লিমনের সহায়তায় কার্যালয়ে তালা দেন।
তিনি আরও বলেন, বুধবার থেকে কার্যালয়ের দরজায় তালা ঝুলছে। বন্ধ রয়েছে সব ধরনের দাফতরিক কার্যক্রম। মানুষ আমাকে জিজ্ঞেস করে অফিস কবে খুলবে। আমি বলেছি, তালাবদ্ধ থাকলে কিভাবে সেবা দেব।এ বিষয়ে যোগাযোগের চেষ্টা করেও প্রশাসনিক কর্মকর্তা হারুন অর রশিদের মন্তব্য পাওয়া যায়নি, কারণ তার মোবাইল নম্বর বন্ধ পাওয়া গেছে।
অন্যদিকে, অভিযোগ অস্বীকার করেছেন অভিযুক্ত বিএনপি নেতা ইব্রাহিম ও সাবেক মেম্বার শাহেদ উদ্দিন। তারা বলেন, লাভলী বেগম সরকারি বরাদ্দ লুটপাটসহ নানা অনিয়মে জড়িত। তিনি স্বৈরাচারীভাবে পরিষদ চালান এবং স্বাক্ষর নকল করে অর্থ আত্মসাৎ করছেন।
এ বিষয়ে হাতিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আলাউদ্দিন বলেন, বিষয়টি জানার পর আমি প্রশাসনিক কর্মকর্তাকে পরিষদে গিয়ে তালা খুলে কার্যক্রম স্বাভাবিক করার নির্দেশ দিয়েছি। যদি তার সম্পৃক্ততা পাওয়া যায়, তাহলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ইতোমধ্যে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্ত প্রতিবেদন অনুযায়ী আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।