
নিজস্ব প্রতিবেদক, বরিশাল: মহিউদ্দিন রনিসহ স্বাস্থ্যখাত সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা ৫ ঘণ্টা বরিশাল কোতোয়ালি মডেল থানায় অবস্থান কারলেও তাদের কাউকেই গ্রেপ্তার করেনি পুলিশ। শেষমেষ গ্রেপ্তার না হওয়াই শিক্ষার্থীরা মঙ্গলবার (১৯ আগস্ট) রাত সাড়ে ১১ টায় বরিশাল কোতোয়ালি মডেল থানা কম্পাউন্ড ত্যাগ করে। এর আগে সন্ধ্যায় ৬ টায় রনিসহ স্বাস্থ্যখাত সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা তাদের গ্রেপ্তারের দাবি জানিয়ে থানার ভেতরে প্রবেশ করে।
এসময় বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ–কমিশনার (দক্ষিণ)মোহাম্মদ ইমদাদ হুসাইন, অতিরিক্ত উপ–কমিশনার (দক্ষিণ)বেলাল হোসাইন-পিপিএম, সহকারী কমিশনার (কোতোয়ালি) অলক কান্তি শর্মাসহ কর্মকর্তারা থানার অভ্যর্থনা কক্ষেই রনিসহ শিক্ষার্থীদের সাথে কথা বলেন।
এসময় রনিসহ শিক্ষার্থীরা গ্রেপ্তার সুহানের মুক্তির দাবি জানান, অন্যথায় তাদের গ্রেপ্তারের কথা বলেন। তবে সেই কথপোকথনের সময় অতিরিক্ত উপ–কমিশনার (দক্ষিণ)বেলাল হোসাইন-পিপিএম এর সাথে রনির বাদানুবাদও হলে উপ–কমিশনার (দক্ষিণ)মোহাম্মদ ইমদাদ হুসাইন পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।
এসময় রনি বলেন, পুলিশ কমিশনার বিএম কলেজ ছাত্র সুহানকে গ্রেপ্তারের বিষয়ে যে বক্তব্য দিয়েছে সেটির আমরা প্রতিবাদ জানাচ্ছি। তিনি ২০১৮ সালের একটি ছবি দেখিয়ে সুহানকে ডেভিল বললেও এমন প্রমাণ বর্তমানে তিনি দেখাতে পারবেন না, সেইসাথে সুহান একজন জুলাই যোদ্ধা ছিল।
যাকে গ্রেপ্তারের মধ্য দিয়ে প্রমাণ হল, জয় বাংলা বলে ছাত্রলীগ যুবলীগের লোকজন যারা শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালিয়েছে তারা বাহিরে থাকবে। দালাল ও সিন্ডিকেট সদস্যরা বাহিরে বীর দর্পে ঘুরবে আর মানুষের অধিকার নিয়ে কথা বলা জুলাই যোদ্ধারা কারাগারে যাবে।
তিনি বলেন, গণমাধ্যমে দেয়া বক্তব্যে পুলিশ কমিশনার বলেছেন আমাকে ধরার জন্য পুলিশ নাকি তারা করেছিল, কিন্তু আমাকে ধরতে তারা করতে হবে কেন। আমি থানায় এসেছি এখন আমাকে গ্রেপ্তার করা হউক। গ্রেপ্তার করে হলেও যদি স্বাস্থ্য খাতের সংস্কার হয়, সাধারণ মানুষের উপকার হয়, তাহলে সেই কারবরণ আমিসহ সকল সহযোদ্ধারা মাথা পেতে গ্রহন করবেন।
এ নিয়ে দীর্ঘক্ষণ পুলিশের কর্মকর্তাদের সাথে শিক্ষার্থীরা কথা বলে থানা কম্পাউন্ডে অবস্থান নেয়। পরে রাত সাড়ে ১১ টার দিকে পুলিশের সাথে বৈঠক শেষে থানা কম্পাউন্ড ত্যাগ করে শিক্ষার্থীরা। এসময় তারা জানান, পুলিশ সুহানের মুক্তির বিষয়ে সার্বিক সহযোগিতা করার কথা জানিয়েছে, সেইসাথে শিক্ষার্থীদের সাথে অসদাচরণ করা পুলিশ সদস্যদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার কথা জানিয়েছে। এছাড়া শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার ঘটনায় মামলা গ্রহণ করার পাশাপাশি শান্তিপূর্ণ আন্দোলন কর্মসূচিতে কোন ধরনের বাধা প্রদান না করার নিশ্চয়তা দিয়েছেন।
তবে বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ–কমিশনার (দক্ষিণ)মোহাম্মদ ইমদাদ হুসাইন জানিয়েছেন, থানা হচ্ছে নাগরিকদের সেবা গ্রহণের জায়গা। এখানে সেবা নিতে যে কেউ আসতে পারে, শিক্ষার্থীরাও এসেছিল। আমরা তাদের দাবির কথা শুনেছি আমরা কি করতে পারবো তাও তাদের বলেছি।
কি মামলায় সুহানকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে তা না জানালেও উপ কমিশনার বলেন, যাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে তাকে সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অপরদিকে মেডিক্যালের স্টাফের দায়ের করা মামলার অন্যতম আসামি রনি থানায় আসলেও তাকে কেন গ্রেপ্তার করা হয়নি জানতে চাইলে তিনি বলেন, অভিযোগ যে কেউ দিতে পারেন এটা তার অধিকার তবে সেটি তদন্ত করে দেখা পুলিশের কাজ। তদন্তে যদি রনির জড়িত থাকার বিষয়টি প্রমাণিত হয় তবে অবশ্যই তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। তবে যে কেউ এসে থানায় গ্রেপ্তার হতে চাইলে তাকে তো সুনির্দিষ্ট অভিযোগ ছাড়া গ্রেপ্তার করা যায় না।