
পটুয়াখালী প্রতিনিধি// পটুয়াখালীতে আসামির জামিন পেতে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুনালের বিচারক (সিনিয়র জেলা জজ) নিলুফার শিরিনের বাসায় ঘুস দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে ট্রাইব্যুনালের সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) মো. রুহুল আমিন নামে এক আইনজীবীর বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় তার সদস্য পদ বাতিল করেছে জেলা আইনজীবী সমিতি।
লিখিত অভিযোগ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুনালের বিচারক নিলুফার শিরিন বলেন, নারী ও শিশু ২৬১/২৫, ধারা ৯ (৩) মামলায় আসামীদের জামিনের বিষয়ে বিচারকের মোবাইল নম্বর (হট্সআপে) বারবার সুপারিশ করেছিলেন পিপি এ্যডভোকেট রুহুল আমিন। কিন্তুু বিচারক কোন উত্তর না দেওয়ায় পরে ২০ আগষ্ট সকাল নয়টার দিকে রুহুল আমিনের এক গৃহপরিচারিকাকে দিয়ে বিচারকের বাসায় একটি লাল ব্যাগ (যার মধ্যে দুটি প্যাকেট ছিল) দেন এবং তিনি বলে যান ব্যাগটি তাকে দিতে, পিপি সাহেব ইহা পাঠিয়েছে। পরে গৃহপরিচারিকা বিচারককে ব্যাগটি হাতে দিয়ে বলেন এটি পিপি সাহেব পাঠিয়েছেন। বিচারক দরজা খুলে ঐ লোককে আর দেখতে পাননি।
পরে বিচারক ব্যাগ খুলে দেখতে পান, তার মধ্যে ২ টি খাঁটি রংগের খাম, যার একটিতে উল্লেখিত মামলার যাবতীয় কাগজপত্র অন্যটিতে ৫০০ টাকার নোটের একটি বান্ডিল, যা তিনি গুনে দেখেননি তবে অনুমানের ভিত্তিতে বুঝতে পেরেছেন ওখানে ৫০ হাজার টাকা আছে।
অভিযোগে তিনি আরো বলেন, এভাবে ঘুষ পাঠানোতে আমি মানসিকভাবে অত্যন্ত অপমানিত এবং তীব্র রাগ বোধ করি। পাশাপাশি তিনি অফিসে এসে জেলা বারের সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক ও জেলা জজের পাবলিক প্রসিকিউটরকে ব্যাপারটি অবহিত করি এবং প্যাকেটটি দেখাই। তারাও প্রচন্ড রাগান্বিত হন এবং আমাকে বিষয়টি ছোট করে না দেখার পরামর্শ দেন। এছাড়া জুলাই আন্দোলনে নিহত শহীদ জসিমের কন্যা আলোচিত লামিয়া গনধর্ষণ মামলার পিপি হয়েও আসামীর পক্ষে তদবির করা সহ বিভিন্ন মামলায় আসামীর পক্ষে তদবির করার বিষয়টি উল্লেখ করেন।
তিনি আরো বলেন, উল্লেখিত পিপিকে নিয়ে আদালতের কার্যক্রম চালানো তার পক্ষে সম্ভব নয়। যাতে বিচারকের সততা ও সুনাম ক্ষুন্ন হয়। আশাকরি ওই পিপির বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান তিনি।
জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি এ্যাডভোকেট হুমায়ুন কবির জানান, বিষয়টি অত্যন্ত লজ্জাজনক। ইতিমধ্যে আজ দুপুরে আইনজীবী সমিতির এক জরুরি সভায় তার সদস্য পদ স্থগিত করা হয়েছে। যেখানে ১৮৪ জন সদস্য উপস্থিত ছিলেন।
এ বিষয়ে পটুয়াখালীর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের পিপি এডভোকেট মোঃ রুহুল আমিন বলেন, এটা আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র। মামলাটি বিগত ফ্যাসিস্ট সরকারের সময়ে বিএনপির নেতা কর্মীদের বিরুদ্ধে দায়ের করা হয়েছিল। তাই আমি বিচারককে বিষয়টি অবহিত করেছি মাত্র।