
বরগুনা প্রতিনিধি// পারিবারিক কলহের জেরে স্ত্রীকে হত্যা করার পর আত্মহত্যা করেছেন এক দিনমজুর। এ ঘটনায় এতিম হয়ে পড়েছে দুই শিশু কন্যা। মানবিক দায়িত্ববোধ থেকে তাদের আশ্রয় দিয়েছেন বরগুনা জেলা জামায়াতে ইসলামীর আমির।
সোমবার (৮ সেপ্টেম্বর) বরগুনা সদর উপজেলার আয়লা পাতাকাটা ইউনিয়নের দক্ষিণ ইটবারিয়া গ্রামে ঘটনাটি ঘটেছে।
নিহতরা হলেন, স্বপন মোল্লা (৩২) ও তার স্ত্রী আকলিমা বেগম (২৭)। স্বপন স্থানীয় খালেক মোল্লার ছেলে এবং আকলিমা একই গ্রামের আব্বাস মৃধার মেয়ে। তাদের সংসারে রয়েছে দুই কন্যা, সাদিয়া (৬) ও আফসানা (১)।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, শনিবার (৬ সেপ্টেম্বর) ভোরে স্বপন ও তার স্ত্রী আকলিমার মধ্যে কথাকাটাকাটির এক পর্যায়ে স্বপন আকলিমাকে গলা কেটে হত্যা করেন। পরবর্তীতে নিজেও গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেন। সকালে তাদের মেয়ে সাদিয়া বাড়ির এক আত্মীয়কে জানায়— ‘মা কিছু বলছে না’। এরপর প্রতিবেশীরা ঘটনাস্থলে গিয়ে পুলিশে খবর দেন। পরবর্তীতে পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের শেষে নিজ বাড়িতে দাফন করা হয়েছে।
মর্মান্তিক এই ঘটনায় অসহায় হয়ে পড়া দুই শিশুকে আশ্রয় দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন বরগুনা জেলা জামায়াতের আমির অধ্যাপক মাওলানা মোহাম্মদ মহিব্বুল্লাহ হারুন।
এ বিষয়ে স্থানীয়রা বলেন, চোখের সামনে দুইটা মেয়ে এতিম হয়ে গেল। এখন যদি কেউ ওদের দায়িত্ব নেয়, তাহলে হয়ত বাচ্চাগুলোর জীবন বাঁচবে। জামায়াতে ইসলামী বাচ্চাদের দায়িত্ব নেওয়ায় আমরা এলাকাবাসী তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি।
নিহত আকলিমার ভাই শফিকুল ইসলাম বলেন, আমরা ছোট বাচ্চাদের নিয়ে খুব দুশ্চিন্তায় ছিলাম। কে দেখবে, কীভাবে মানুষ হবে— এসব চিন্তা করছিলাম। জেলা জামায়াতের আমির সাহেব যখন লেখাপড়াসহ সব দায়িত্ব নিলেন, তখন কিছুটা স্বস্তি পেয়েছি। তবে আমরা চাই, ওরা যেন ভালোভাবে বড় হয়।
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামির বরগুনা জেলা আমির অধ্যাপক মাওলানা মহিব্বুল্লাহ্ হারুন সাংবাদিকদের বলেন, মানবতার খাতিরে জামায়াতে ইসলামীর পক্ষ থেকে আমরা দুই শিশুর দায়িত্ব নিয়েছি। তাদের শিক্ষা, চিকিৎসা ও ভরণপোষণের সম্পূর্ণ দায়িত্ব আমাদের সংগঠন বহন করবে। আমরা চাই সমাজের সবাই এতিম-অসহায় শিশুদের পাশে দাঁড়াবে।