এম.কে. রানা॥ মহামারী করোনার মধ্যেও বরিশাল জেলার বিভিন্ন খেয়াঘাটে ইজারাদারদের হাত থেকে মুক্তি মিলছে না যাত্রীদের। প্রত্যেকটি খেয়াঘাটে ভাড়ার তালিকা প্রদর্শনের নির্দেশনা থাকলেও তা মানা হচ্ছে না। ঘাটভেদে যাত্রী পারাপারে ভাড়া ২-৬ টাকা হলেও দ্বিগুণেরও বেশি টাকা আদায় করছেন ইজারাদাররা। আর সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে অভিযোগ দিলেও প্রতিকার পাচ্ছেন না ভুক্তভোগী এসব সাধারণ যাত্রীরা।
জেলা পরিষদ সূত্রে জানা যায়, জেলার ২০টিরও বেশি ঘাট ইজারা দেওয়া হয়েছে। ইজারার শর্তানুযায়ী, যাত্রী পারাপারে জনপ্রতি ভাড়া দুই টাকা থেকে সর্বোচ্চ ছয় টাকা। সাইকেলসহ যাত্রী ভাড়া চার টাকা থেকে সাত টাকা। মোটরসাইকেলসহ যাত্রী ভাড়া আট টাকা থেকে সর্বোচ্চ ১৬ টাকা। শিক্ষার্থীরা বিনা ভাড়ায় পার হতে পারবে। পাঁচ বছরের নিচে শিশু এবং প্রতিবন্ধীরা টোলের আওতামুক্ত। এ ছাড়া একজন যাত্রী ১৫ কেজি পর্যন্ত মাল বিনা ভাড়ায় বহন করতে পারবেন।
গত কয়েক মাস বিভিন্ন খেয়াঘাট ঘুরে দেখা যায়, জেলার কোনো ঘাটেই ভাড়ার তালিকা টানানো নেই। সব ঘাটেই বাড়তি ভাড়া আদায় করা হচ্ছে। বাবুগঞ্জ উপজেলার মীরগঞ্জ-মুলাদী খেয়াঘাটে যাত্রীদের কাছ থেকে আদায় করা হচ্ছে ২০ টাকা, মোটরসাইকেলসহ যাত্রী ৮০ টাকা।
বাকেরগঞ্জ উপজেলার শিয়ালঘুনি খেয়াঘাটে যাত্রী ১০ টাকা এবং মোটরসাইকেলসহ যাত্রী পারাপারে ৫০ টাকা, বাকেরগঞ্জের সতরাজ খেয়াঘাটে যাত্রী ১০ এবং মোটরসাইকেল ৫০ টাকা। সদর উপজেলার বেলতলা খেয়াঘাটে মোটরসাইকেলসহ যাত্রী ৪০ টাকা। যাত্রীদের কাছ থেকে ১০ টাকা আদায় করা হচ্ছে। অন্য ঘাটগুলোরও প্রায় একই অবস্থা।
মুলাদী উপজেলার বাসিন্দা কামাল হোসেন বলেন, মীরগঞ্জ খেয়ায় শিশুদের কাছ থেকেও আদায় করা হচ্ছে ভাড়া। যাত্রীপ্রতি ২০ টাকা এবং মোটরসাইকেলের জন্য ৮০ টাকা দিতে হয়। ইজারাদারের ট্রলার আরাল করে রিজাফের নামে হাতিয়ে নেয় ডাবল অর্থ।
বাবুগঞ্জ ডিগ্রি কলেজের শিক্ষার্থী ফাইজুল ইসলাম অভিযোগ করেন, ‘১০ টাকাই দিতে হয়েছে। না হয় পেতে হয় খারাপ ব্যাবহার। খেয়াঘাট এলাকার বাসিন্দাদের অভিযোগ, মীরগঞ্জ ঘাটে ইজারাদারের ট্রলার আছে মাত্র দুটি। পর্যাপ্ত ট্রলার না দিয়ে ফায়দা লুটছে অন্য ট্রলার দিয়ে। একটি ওষুধ কোম্পানির বিক্রয় প্রতিনিধি মো. কামালউদ্দিন বলেন, ঘাটে এসে ইজারাদারের ট্রলার পাইনি। বাধ্য হয়ে অন্য ট্রলারে উঠতে হয়েছে। ৪০ টাকা ভাড়া দিতে হয়েছে। ১০ কেজি ওজনের ওষুধের কার্টনের জন্য খরচ হয়েছে ১০০ টাকা।
মীরগঞ্জ ঘাটে ইজারাদারের পক্ষে টাকা উত্তোলন করা এক ব্যাক্তি বলেন, ‘ইজারাদারের ট্রলার ছাড়া অন্য ট্রলারে উঠলে অতিরিক্ত অর্থ দিতে হয়।’
বাকেরগঞ্জের গোমা খেয়া পারাপারেও নৈরাজ্য চলছে। সেখানে ৫ টাকার খেয়া পারাপারে ১০ টাকা নেওয়া হচ্ছে। স্থানীয় একাধিক যাত্রী জানায়, ফেরিতে পারাপার করলেও খেয়াঘাটে ভাড়া দিতে হয়। না দিলে হেনস্থার শিকার হতে হচ্ছে। এছাড়া সদর উপজেলার আড়িয়াল খা নদীর শায়েস্তাবাদ সেতুর ইজারাদারদের বিরুদ্ধেও রয়েছে যাত্রী হয়রানীর অভিযোগ।
এ ব্যাপারে বরিশাল জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ মানিকহার রহমান’র মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ না করায় তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
Map plugins by Md Saiful Islam | Android zone | Acutreatment | Lineman Training
আপনার মতামত লিখুন :