
নিজস্ব প্রতিবেদক// বরিশালের বানারীপাড়ায় জাল সনদে একটি বিদ্যালয়ের এডহক কমিটির সভাপতির পদ বাগিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে উপজেলা বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক মো: সবুর খানের বিরুদ্ধে। এ নিয়ে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যানের একটি অভিযোগ দিয়েছেন স্থানীয়রা। বোর্ড কর্তৃপক্ষ বলেছেন, অভিযোগ সত্য হলে মিথ্যা তথ্য দেওয়ায় তার বিরুদ্ধে প্রচলিত আইনে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
বিদ্যালয় সূত্র জানায়, চলতি বছরের ফ্রেব্রয়ারী মাসে বরিশাল শিক্ষা বোর্ডের বিদ্যালয় পরিদর্শক প্রফেসর মো. রফিকুল ইসলাম খান স্বাক্ষরিত এক পত্রে বাইশারী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের কমিটির অনুমোদন দেন। এতে উপজেলা বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক ও বাইশারী ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আঃ সবুর খান সভাপতি, মো. হুমায়ুন কবিরকে অভিভাবক সদস্য, বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মো. ফিরোজ আহম্মেদকে শিক্ষক প্রতিনিধি সদস্য ও প্রধান শিক্ষক মো. ফকরুল আলমকে পদাধিকার বলে সদস্য সচিব করা হয়।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সর্বশেষে নীতিমালা অনুযায়ী স্কুল কমিটির সভাপতি হতে হলে তাকে কমপক্ষে স্নাতক পাস হতে হবে। কমিটি গঠনের সময়ে দেওয়া জীবনবৃত্তান্তে সবুর খান বিএ পাস উল্লেখ করেন। কিন্তু এ অনুকূলে শিক্ষাগত যোগ্যতার সনদের কোনো অনুলিপি জমা দেননি। সেই অনুযায়ী বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সবুর খানের নাম তালিকার এক নম্বরে রেখে সুপারিশ বোর্ডে পাঠানো হয়।
অভিযোগকারী মামুন ফরাজী বলেন, বাইশরী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সভাপতি আব্দুস সবুর খান তার তার বায়ো ডাটায় শিক্ষাগত যোগ্যতা হিসেবে বিএ পাশ উল্লেখ করেছেন। মূলত তিনি বিএ পাস নন। বিএনপির নেতা হয়ে দলীয় প্রভাব খাটিয়ে প্রায় দেড়শত বছরের ঐতিহ্যবাহী বাইশারী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সভাপতির পদ বাগিয়ে নিয়েছেন। তাই এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে বিএ পাসের তথ্য যাচাইয়ের বোর্ড নির্ধারিত ফি জমা দিয়ে আবেদন করেছি। আবেদনের কারার প্রায় এক মাস পার হলেও বোর্ড কর্তৃপক্ষ কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি।
বাইশারী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. ফকরুল আলম বলেন, বিদ্যালয়ের এডহক কমিটি গঠনের জন্য চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে স্থানীয় বিএনপির নেতারা সভাপতি পদে সবুর খানের নাম প্রস্তাব করেন। তিনি আমাদের বিদ্যালয়ের সাবেক ছাত্র হওয়ায় তাকে এক নম্বরে রেখে তিনজন প্রার্থীর তালিকা ইউএনও অফিসে জমা দেওয়া হয়। তালিকার সাথে সবুর খানের দেওয়ার একটি জীবন বৃত্তান্ত দেওয়া হয়েছে। এতে তিনি বিএ পাস বলে উল্লেখ করেন। সময় স্বল্পতা এবং ব্যস্ততার কারণে তার দেয়া তথ্য যাচাই বাছাই করার সুযোগ আমাদের হয়নি। পরে শিক্ষা বোর্ড কর্তৃপক্ষ সবুর খানকে কমিটির সভাপতি করে নোটিশ জারি করে এবং আমাদের চিঠি দেয়।
এ বিষয়ে বরিশাল মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের বিদ্যালয় পরিদর্শক প্রফেসর মো. রফিকুর ইসলাম খান খবরের কাগজকে বলেন, স্থানীয় মামুন ফরাজীর অভিযোগের ভিত্তিতে সহকারী বিদ্যালয় পরিদর্শককে তদন্তের জন্য নিদের্শ দেওয়া হয়েছে। দ্রুত সময়ে মধ্যে তাকে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।
বরিশাল মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান প্রফেসর মো. ইউনুস আলী সিদ্দিকী বলেন, বাইশারী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সভাপতির বিরুদ্ধে উঠা অভিযোগের তদন্ত চলছে। অভিযোগে প্রমাণিত হলে কমিটি বাতিলসহ মিথ্যা তথ্য দেওয়ার অপরাধে তার বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।