1. diggilseba@gmail.com : admin :
  2. ashadul@barisalcrimetrace.com : Ashadul Islam : আসাদুল ইসলাম
  3. hafiz@barisalcrimetrace.com : barisal CrimeTrace : barisal CrimeTrace
  4. mahadi@barisalcrimetrace.com : মাহাদী হাসান : মাহাদী হাসান
পাচার হওয়া সম্পদ পুনরুদ্ধারই আমাদের অন্যতম অগ্রাধিকার : জাতিসংঘে ড. ইউনূস - Barisal Crime Trace । বরিশাল ক্রাইম ট্রেস
বৃহস্পতিবার, ২০ নভেম্বর ২০২৫, ০৫:০৪ পূর্বাহ্ন

পাচার হওয়া সম্পদ পুনরুদ্ধারই আমাদের অন্যতম অগ্রাধিকার : জাতিসংঘে ড. ইউনূস

  • আপডেট সময় : শুক্রবার, ২৬ সেপ্টেম্বর, ২০২৫

অনলাইন ডেস্ক// বাংলাদেশ থেকে পাচার হওয়া সম্পদ পুনরুদ্ধার করাই বর্তমানে সরকারের অন্যতম শীর্ষ অগ্রাধিকার বলে জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

 

শুক্রবার (২৬ সেপ্টেম্বর) দুপুরে নিউইয়র্ক সময় জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৮০তম অধিবেশনে এ কথা জানান তিনি। অধিবেশনে তিনি বাংলায় ভাষণ দেন।

 

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, দেশের পাচার হওয়া সম্পদ পুনরুদ্ধার করাই বর্তমানে আমাদের অন্যতম শীর্ষ অগ্রাধিকার। গত ১৫ বছরে দুর্নীতির মাধ্যমে শত শত কোটি ডলার অবৈধভাবে পাচার করা হয়েছে। আমরা নিরলসভাবে এ সম্পদ ফেরত আনার চেষ্টা করছি। কিন্তু সংশ্লিষ্ট দেশগুলোর আইনি প্রক্রিয়া এবং অন্যান্য নানাবিধ প্রতিবন্ধকতার কারণে এ প্রচেষ্টা বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। সংশ্লিষ্ট দেশগুলোর দৃঢ় সদিচ্ছা ছাড়া এ সম্পদ পুনরুদ্ধারের চেষ্টা সফল হবে না। বিশ্বের বিদ্যমান অর্থনৈতিক ব্যবস্থা উন্নয়নশীল দেশ থেকে এ পাচার কার্যকরীভাবে প্রতিরোধ করতে ব্যর্থ হচ্ছে। কোনো কোনো ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর বিধিবিধানগুলো বিশ্বব্যাপী বিভিন্ন ট্যাক্স হেভেন এ বিপুল পরিমাণ অর্থ স্থানান্তরে উৎসাহিত করছে।

 

অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস আহ্বান জানান, যেসব দেশ ও প্রতিষ্ঠান-এ পাচার করা সম্পদ গচ্ছিত রাখার সুযোগ দিচ্ছে, তাদের আমি আহ্বান জানাচ্ছি, তারা যেন এ অপরাধের শরিক না হয়—এ সম্পদ তার প্রকৃত মালিককে অর্থাৎ কৃষক, শ্রমিক ও সাধারণ করদাতাদের কাছে ফিরিয়ে দিন। আমি উন্নয়নশীল দেশ হতে সম্পদ পাচাররোধে কঠোর আন্তর্জাতিক বিধি বিধান প্রণয়ন এবং এর প্রয়োগ নিশ্চিতের প্রস্তাব করছি।

 

তিনি বলেন, গতবছর, আপনাদের এ মহান সভায় আমি দাঁড়িয়েছিলাম সদ্য গণঅভ্যুত্থান সংঘটিত একটি দেশের রূপান্তরের আকাঙ্ক্ষা আপনাদের শোনানোর জন্য। আজ আমি এ রূপান্তরের অগ্রযাত্রায় আমরা কতটুকু অগ্রসর হতে পেরেছি তা বলবো। বিশ্বের প্রতি ১০০ জনের মধ্যে তিনজন বাংলাদেশে বাস করে। সে কারণে অথবা ভূ-রাজনৈতিকভাবে বিশ্বের একটি গুরুত্বপূর্ণ অবস্থানে বাংলাদেশ রয়েছে বলে আমাদের এ ইতিহাস জানার দরকার, তা কিন্তু নয়। বরং এ কারণে বাংলাদেশের এ বর্ণনাটি গুরুত্বপূর্ণ যে তা সাধারণ মানুষের অসাধারণ ক্ষমতার ওপর আস্থা তৈরি করবে, এ কারণে বর্ণনাটি গুরুত্বপূর্ণ যে তা বিশ্বের সব দেশের মধ্যে আশার সঞ্চার করবে, যে সংকট যত গভীরই হোক না কেন বা তার নিরসন যত অসম্ভবই মনে হোক না কেন, কখনই তা থেকে উত্তরণের পথ হারিয়ে যায় না।

 

পাচার হওয়া সম্পদ পুনরুদ্ধারই আমাদের অন্যতম অগ্রাধিকারজাতিসংঘ অধিবেশনে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও তার সফরসঙ্গীরা

 

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক ন্যায়বিচারের দাবিতে এক রক্তক্ষয়ী সংগ্রামের মাধ্যমে ১৯৭১ সালে বাংলাদেশ জন্ম লাভ করে। কিন্তু যে অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য আমরা বিশাল আত্মত্যাগ করেছিলাম, তা গত পাঁচ দশকে বার বার বাধাপ্রাপ্ত হয়েছে। বারবার আমাদের ছেলে-মেয়েদের নেতৃত্বে আমাদের জনগণকে অসংখ্য ত্যাগ স্বীকার করে সে অধিকারকে পুনঃপ্রতিষ্ঠিত করতে হয়েছে। এ বছর আমরা ‘জুলাই গণঅভ্যুত্থান’-এর প্রথমবার্ষিকী পালন করেছি— যে অভ্যুত্থানে আমাদের তরুণসমাজ স্বৈরাচারকে পরাভূত করেছিল, যার ফলে আমরা বৈষম্যমুক্ত ও ন্যায়বিচারভিত্তিক সমাজ বিনির্মাণের অভিযাত্রা নতুনভাবে শুরু করতে পেরেছি। সেই বৈষম্যমুক্ত ও ন্যায়বিচারভিত্তিক সমাজ বিনির্মাণের আকাঙ্ক্ষা পূরণের দায়িত্ব দেওয়া হয় আমাকে ও আমার সহকর্মীদের।

 

‌‘ভেঙে পড়া রাষ্ট্র কাঠামোকে পুনর্গঠন করে জনগণের আকাঙ্ক্ষা পূরণের জন্য প্রয়োজন ছিল ব্যাপক প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কারের। যে বিপুল জনসমর্থনের মাধ্যমে আমরা দায়িত্ব পেয়েছিলাম, তার প্রেক্ষাপটে আমাদের জন্য সহজ পথ ছিল নির্বাহী আদেশে সংস্কার কাজগুলো করা। কিন্তু আমরা বেছে নেই কঠিন পথ— অন্তর্ভুক্তিমূলক ও টেকসই পথ।’

 

ড. ইউনূস বলেন, আমাদের লক্ষ্য ছিল ক্ষমতার ভারসাম্যপূর্ণ একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র কাঠামো গড়ে তোলা— যেখানে আর কোনো স্বৈরশাসকের আবির্ভাব হবে না, কোনো নির্বাচিত নেতা রাষ্ট্রের গণতান্ত্রিক স্বরূপকে ক্ষুণ্ন করতে পারবে না, কিংবা রাষ্ট্র ও জনগণের রক্ষকরা ভক্ষকে পরিণত হতে পারবে না।

 

এর আগে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস নিউইয়র্ক সময় সোমবার (২২ সেপ্টেম্বর) জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৮০তম অধিবেশনে যোগ দিতে যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে পৌঁছান। প্রধান উপদেষ্টা ও তার সফরসঙ্গীদের বহনকারী এমিরেটস এয়ারলাইন্সের একটি বাণিজ্যিক ফ্লাইট স্থানীয় সময় বিকেল ৩টায় জন এফ কেনেডি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে।

 

এ বছর প্রধান উপদেষ্টার সফরসঙ্গীদের মধ্যে ছয় রাজনৈতিক নেতা রয়েছেন। তাদের মধ্যে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের পররাষ্ট্রবিষয়ক উপদেষ্টা হুমায়ুন কবির, জামায়াতের নায়েবে আমির সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের, জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সদস্যসচিব আখতার হোসেন ও যুগ্ম আহ্বায়ক ডা. তাসনিম জারা ঢাকা থেকে প্রতিনিধিদলের সঙ্গে যোগ দেন। এছাড়া জামায়াত নেতা নকিবুর রহমান তারেক যুক্তরাষ্ট্র থেকে প্রতিনিধিদলে যুক্ত হন।

প্রধান উপদেষ্টার আগামী ২ অক্টোবর দেশে ফেরার কথা রয়েছে।

পোস্টটি সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

এই ক্যাটাগরির আরও নিউজ
© All rights reserved © 2025 Barisal Crime Trace
Theme Customized By Engineer BD Network