
ইফতেখার শাহীন, বরগুনা// বারবার অতিবৃষ্টিতে জলাবদ্ধতায় নষ্ট হয়েছে আমনের বীজতলা। চোখের সামনে শ্রম ও মূলধন বিনষ্ট হতে দেখে হতাশায় ডুবে গিয়েছিল উপকূলীয় জেলা বরগুনার প্রন্তিক কৃষকরা। অতিবৃষ্টির কারণে এ বছর আমন মৌসুমের শুরুটা ছিল কৃষকের জন্য দুঃস্বপ্নের মতো। তবে কৃষকের মনোবলকে দমিয়ে রাখা যায়নি। ক্ষতির মধ্যেও তারা হাল ছাড়েননি, নতুন করে বিভিন্ন সংস্থা থেকে ঋন নিয়ে বিপুল উৎসাহ উদ্দিপনায় আবারও বীজতলা তৈরি করেছেন তারা।
দক্ষিণ অঞ্চল বরগুনা জেলার বিস্তীর্ণ এলাকায় একই দৃশ্য দেখা গেছে। এবারের মৌসূমে টানা কয়েক দফা বৃষ্টির কারণে একাধিকবার আমনের বীজতলা ডুবে গিয়ে পঁচে যায়। কৃষকরা জানান, প্রতিবারই মনে হয়েছে এবার আর সম্ভব নয়। কিন্তু জীবিকা আর মাটির টানে আবারও চাষাবাদের কাজে ঝুঁকেছেন তারা ।
কৃষি বিভাগের কর্মকর্তারা মাঠে নেমে কৃষকদের পাশে দাঁড়িয়েছেন। বিনামূল্যে বীজ, সার সরবরাহ, প্রযুক্তিগত সহায়তা এবং বিকল্প বীজতলা তৈরির পরামর্শ দিয়ে তারা কৃষকদের ঘুরে দাঁড়াতে উৎসাহ দিয়েছেন। এতে নতুন করে আশার সঞ্চার হয়েছে কৃষকদের মনে।
বরগুনা সদরের গৌরিচন্না লাকুরতলা এলাকার কৃষক আবুদল খবির জানান, তিনবার আমনের বীজতলা করেছি, তিন বারই অতি বৃষ্টির কারনে বীজ পঁচে যায়। শেষে ধার দেনা করে পুনরায় বীজতলা করে ধান রোপন করেছি। এখন ধান গাছের চারা সবুজ হয়ে মাঠে দুলছে। আল্লাহ দিলে ভালো ফলনের আশা করছি।
দক্ষিণাঞ্চলের কৃষকরা এবারের আমন মৌসূমে কঠিন পরিস্থিতি মোকাবিলা করে তারা নতুন করে প্রাণ ফিরে পেয়েছেন। যদিও উৎপাদন খরচ বেড়েছে, তবে এ মৌসুমে ভালো ফলনের আশা করছেন তারা।
বরগুনা সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, এবারে আমন মৌসূমে অতিবৃষ্টির কারনে ফসলের ক্ষেতে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। এতে বীজতলায় পঁচন ধরে। বৃষ্টির প্রকোপ কিছুটা কমলে পানি নেমে গেলে নতুন করে বীজতলা তৈরির সামর্থ্য অনেক কৃষকেরই ছিলনা, তাই কৃষি বিভাগ থেকে কৃষকদের বীজ, সার ও বিভিন্ন রকম সহযোগিতা প্রদান করলে দক্ষিণাঞ্চলের ক্ষতিগ্রস্থ অনেক কৃষকই আমন চাষে পুনরায় ঘুরে দাঁড়াতে সক্ষম হয়েছেন।
প্রকৃতির প্রতিকূলতার মধ্যেও কৃষকের এ দৃঢ়তা কেবল তাদের পরিবারের নয়, দেশের খাদ্য উৎপাদনে বড় ভরসা। তাই কৃষকদের এই ঘুরে দাঁড়ানো, যেন হয়ে উঠেছে উৎসাহ উদ্দীপনা এবং প্রেরণার প্রতীক।