
ঝালকাঠি প্রতিনিধি : ঝালকাঠি সদর উপজেলার গাভারামচন্দ্রপুর ইউনিয়নের রমজানকাঠি কারিগরি ও কৃষি কলেজ কর্তৃপক্ষের অনিয়ম ও স্বেচ্ছাচারিতার বিরুদ্ধে এলাকাবাসীর উদ্যোগে প্রতিবাদ সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
রবিবার ১২ অক্টোবর সকাল ১১টায় কলেজ ক্যাম্পাসে ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি রিয়াছুল আমিন জামাল সিকদারের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন কলেজের প্রতিষ্ঠাতা, জমি দাতা ও কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের সাবেক উপ-পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক মো. সুলতান হোসেন তালুকদার, জেলা প্রশাসক মনোনীত শিক্ষানুরাগী সদস্য, ৮ নং ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি সাবেক পুলিশ কর্মকর্তা আঃ মতিন খান, বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল আজিজ তালুকদার, বিশিষ্ট ব্যবসায়ী ও সাবেক ছাত্রদল নেতা এমদাদুল হক সুমন, কলেজে ব্যবস্থাপনা কমিটির শিক্ষক প্রতিনিধি কবিতা সিকদার প্রমুখ। এসময় এলাকার শতাধিক গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ ও যুব সমাজের নেতৃবৃন্দ ও কলেজের শিক্ষক- কর্মচারী ও বর্তমান ও সাবেক শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।
বক্তারা বলেন, “ভুয়া ও অকার্যকর শিক্ষা উন্নয়ন ফাউন্ডেশন গঠন করে উহার সভাপতি হয়েছেন আওয়ামী ফ্যাসিবাদীদের দোসর জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় নেতা এমএ কুদ্দুস খান। তিনি নাম সর্বস্ব শুধু মাত্র কাগজ কলমে শিক্ষা উন্নয়ন ফাউন্ডেশন-এর সাইনবোর্ড ব্যবহার করে সংস্থা পরিচালিত ব্যবস্থাপনা কমিটি গঠন করে কলেজটি কুক্ষিগত করে রেখেছে।
বিগত ২০ বছরে কলেজের কোন উন্নয়ন করেন নাই তিনি। তার আপন ভাগ্নী, ভাগ্নি জামাই, বোন জামাই ও ভাইয়ের বউ কে চাকুরি দিয়ে কলেজটি আত্মীয় করন ও স্বজনপ্রীতি ছাড়া কিছুই করেনি । শিক্ষা উন্নয়ন ফাউন্ডেশনের পরিচালনা কমিটির সদস্য বেশিরভাগ তার পরিবারের সদস্য ও আত্মীয় স্বজন নিয়ে গঠন করা হয়েছে।
জমি দাতা ও প্রতিষ্ঠাতা মো. সুলতান হোসেনকে বাদ দিয়ে এবং কোন কিছু না জানিয়ে কুদ্দুস খানের আপন ভাই নাসির খানকে কলেজ কমিটির সদস্য করেছে। এমনকি শিক্ষা উন্নয়ন ফাউন্ডেশনের সাধারণ সম্পাদক সুলতান হোসেনকে অনুপস্থিত রেখে পরিকল্পিতভাবে মনগড়া কলেজ ব্যবস্থাপনা কমিটি তড়িঘড়ি করে গঠন করে।
এসকল অপকর্মের সাথে ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সভাপতি হুমায়ুন খন্দকার জড়িত আছেন বলে বক্তারা সভায় জানান। তেরোয়ানা গ্রামের অধ্যাপক মিজান মাঝির মদদ ও সহযোগিতা নিয়ে হুমায়ুন খন্দকার কুদ্দুস খানের পরামর্শে কলেজের গুপ্ত ব্যবস্থাপনা কমিটি গঠন করেছেন।
এরপর কলেজ ব্যবস্থাপনা কমিটির প্রথম সভা পূজার বন্ধের মধ্যে ডাকা হলে কমিটির ৯ জন সদস্যের মধ্যে চারজন উপস্থিত হন এবং কোরাম সংকটে পড়েন। বাকি ৫ জন সদস্য অনুপস্থিত হলে তাদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভয় দেখিয়ে চাপ প্রয়োগ করে রেজুলেশন খাতায় স্বাক্ষর নেয়ার ব্যর্থ চেষ্টা চালায়।
দোগলচিরা গ্রামের জলিল উকিলের ছেলে কিবরিয়া ও রমজান কাঠির ৮ নং ওয়ার্ডের মেম্বার রমিজ হাওলাদার এই ন্যক্কারজনক কাজের নেতৃত্ব দেন। উক্ত রমিজ এলাকায় মাদক ও নেশার সাথে জড়িত বলে অভিযোগে রয়েছে। স্থানীয় লোকেরা জানান, রমিজ মেম্বার এর চলাফেরা এলাকার বখাটে নেশায় আসক্ত ছেলেদের সাথে।
শিক্ষক প্রতিনিধি কবিতা সিকদার বলেন, “আমি সংখ্যালঘু হিন্দু সম্প্রদায়ের লোক এবং নারী মানুষ। অপরিচিত কয়েকজন মিলে আমার বাড়ি কলেজের রেজুলেশন খাতা নিয়ে স্বাক্ষর নেয়ার জন্য যায়। আমাকে বাড়ি না পেয়ে আমার স্বামীকে ভয়ভীতি দেখানো হয়েছে। পরে আমাকে ফোনে হুমকি ধমকি দেয়। রেজুলেশন খাতায় স্বাক্ষর না দিলে চাকরি থাকবে না এবং কলেজে যেতে দেবে না বলে ভয় দেখায়। আমি নিরুপায় হয়ে পড়েছি এবং জীবনের নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। “
কলেজের প্রতিষ্ঠাতা মো. সুলতান হোসেনসহ এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ বলেন, ভুয়া অকার্যকর শিক্ষা উন্নয়ন ফাউন্ডেশন দ্বারা রমজানকাঠি কারিগরি ওই কৃষি কলেজ পরিচালনা করতে চাই না। অবিলম্বে সংস্থা পরিচালিত ব্যবস্থাপনা কমিটি গঠন পদ্ধতি বাতিল করে স্থানীয় প্রশাসন এর অধীনে ব্যবস্থাপনা কমিটি গঠনের দাবি জানান। শিক্ষা উন্নয়ন ফাউন্ডেশন সভাপতি কুদ্দুস খানের স্বেচ্ছাচারিতা, অনিয়ম ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে সভার সমাপ্তি ঘটে।