1. diggilseba@gmail.com : admin :
  2. ashadul@barisalcrimetrace.com : Ashadul Islam : আসাদুল ইসলাম
  3. hafiz@barisalcrimetrace.com : barisal CrimeTrace : barisal CrimeTrace
  4. mahadi@barisalcrimetrace.com : মাহাদী হাসান : মাহাদী হাসান
বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের মেয়েদের হলে তীব্র পানি সংকট ও নানান ভোগান্তি - Barisal Crime Trace । বরিশাল ক্রাইম ট্রেস
বুধবার, ১৯ নভেম্বর ২০২৫, ০৯:০৪ অপরাহ্ন

বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের মেয়েদের হলে তীব্র পানি সংকট ও নানান ভোগান্তি

  • আপডেট সময় : মঙ্গলবার, ২৮ অক্টোবর, ২০২৫

 

ববি প্রতিনিধি: প্রাচ্যের ভেনিস খ্যাত দক্ষিণাঞ্চলের সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠ বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় (ববি)। বিশ্ববিদ্যালয়টিতে ছাত্র–ছাত্রীদের আবাসনের জন্য রয়েছে মোট চারটি হল। এর মধ্যে দুটি মেসাদয়েদের হল— তাপসী রাবেয়া বশরী হল এবং কবি সুফিয়া কামাল হল। তবে আবাসনের সীমাবদ্ধতার পাশাপাশি এই দুই হলে নানা সমস্যা ও সংকটের মধ্যে দিন কাটাচ্ছেন আবাসিক শিক্ষার্থীরা।

তীব্র পানি সংকটে শিক্ষার্থীরা

তাপসী রাবেয়া বশরী হলে প্রায়ই দেখা দেয় পানির সংকট। দুপুরের দিকে অনেক সময় ট্যাংকিতে পানি না থাকায় শিক্ষার্থীরা চরম ভোগান্তিতে পড়েন। হলের ফিল্টারও পর্যাপ্ত নয়— যেগুলো আছে, সেগুলো দিয়ে সব শিক্ষার্থীর চাহিদা পূরণ সম্ভব হয় না। বিশেষ করে খাওয়ার পানির তীব্র সংকটে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছেন শিক্ষার্থীরা।

গত এক সপ্তাহ ধরে এই সমস্যা সহ্যের সীমা ছাড়িয়েছে। অধিকাংশ সময়েই হলে পানি থাকে না, এতে চরম ভোগান্তিতে পড়ছেন আবাসিক শিক্ষার্থীরা। পানি ছাড়া কোনো কাজই ঠিকভাবে করতে পারছেন না তারা। অবস্থা এমন দাড়িয়েছে সকালে উঠে ওয়াশরুম বা মুখ ধোয়ারও পানি থাকে না খাওয়ার পানি তো দূরে থাক। এই সমস্যা আরও তীব্র থেকে তীব্র আকার ধারণ করছে।

একাধিক শিক্ষার্থীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, “তাপসী রাবেয়া বশরী হলে পানি ওঠানোর মোটর মাত্র দুটি। এই দুটি মোটর দিয়েই পাঁচতলা হলের ১২টি ট্যাংকিতে পানি তোলা হয়। সব সিট পূর্ণ হয়ে যাওয়ায় শিক্ষার্থীর সংখ্যা বেড়েছে, ফলে পানির সংকটও তীব্র আকার নিয়েছে। দুপুরের সময় হলে পানি না থাকায় গোসলসহ নিত্যকার কাজে ভোগান্তিতে পড়তে হয়। আর এখন তো এই সমস্যা সহ্যের সীমা ছাড়িয়েছে”

আলো ও নিরাপত্তাহীনতা

তাপসী রাবেয়া বশরী হল ও কবি সুফিয়া কামাল হলের অন্যতম বড় সমস্যা হলো রাস্তায় পর্যাপ্ত আলোর অভাব। শিক্ষার্থীরা জানান, বেশিরভাগ সময়ই হলের সামনের লাইটগুলো নষ্ট থাকে। ফলে সন্ধ্যার পর অন্ধকারে হলে আসতে ভয় পান অনেকেই। অন্ধকারে পথ চলতে গিয়ে নিরাপত্তাহীনতায় ভোগেন তারা।

দুর্বল ওয়াইফাই ও অপর্যাপ্ত পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা

শিক্ষার্থীরা আরও অভিযোগ করেন, হলে ওয়াইফাই স্পিড অত্যন্ত দুর্বল। ফলে অনলাইন ক্লাস, রিসার্চ বা অ্যাসাইনমেন্টের কাজ করতে গিয়ে বারবার সমস্যায় পড়তে হয়।

এছাড়া দুই হলেই ক্লিনার সংখ্যা অপ্রতুল। তাপসী রাবেয়া বশরী হলে মাত্র দুইজন ক্লিনার থাকায় পুরো পাঁচতলা ভবন পরিষ্কার রাখা সম্ভব হয় না। শিক্ষার্থীরা বলেন, “হল প্রায়ই নোংরা থাকে। প্রতিদিন নিয়মিত পরিষ্কার করা হলে ভালো হতো।”

অন্যদিকে, হলের ময়লা ফেলার স্থান রাস্তার পাশে হওয়ায় প্রচণ্ড দুর্গন্ধ ছড়ায় এবং পরিবেশ নষ্ট হয়। ময়লার পাশে সবসময় কুকুর ঘোরাফেরা করে, যা শিক্ষার্থীদের জন্য ভীতিকর পরিস্থিতি তৈরি করে।

নিরাপত্তা ও অস্বস্তিকর পরিস্থিতি

শিক্ষার্থীরা আরও অভিযোগ করেন, “ইদানিং অনুমতি ছাড়া কিছু পুরুষ হঠাৎ করে হলে প্রবেশ করে, এতে বিব্রতকর পরিস্থিতি তৈরি হয়।“ এছাড়াও, দুই হলে পর্যাপ্ত আলোর ব্যবস্থা না থাকায় রাতে যাতায়াতে ভোগান্তিতে পড়তে হয়। বিশেষ করে কবি সুফিয়া কামাল হলের সামনের রাস্তা প্রায়ই অন্ধকার থাকে।

শিক্ষার্থীদের অভিমত

তাপসী রাবেয়া বশরী হলের শিক্ষার্থী সাথী আক্তার বলেন, “পুরো হলে মানুষের তুলনায় পানির ফিল্টার কম। আর এখন তো পানির মোটরেই সমস্যা। দীর্ঘ ১ সপ্তাহ ধরে পানির সমস্যা মারাত্মক আকার ধারণ করেছে। সময়মতো গোছল করতে পারছি না। খাওয়ার পানি পাওয়া তো ভাগ্যের ব্যাপার হয়ে দাড়িয়েছে। পাশের হল থেকে পানি নিয়ে আসতে হয়৷ তাও পানি ঠিকমতো পাওয়া যায়না। এই দুইদিন সকালে উঠেই দেখি পানি নেই। এমনকি ওয়াশরুমে যাওয়ারও পানি থাকছে না। এই সমস্যা দীর্ঘদীন ধরেই চলছে। হলের কর্তপক্ষকে জানানো হচ্ছে। কিন্তু তারা শুধু আশ্বাস দিয়েই যাচ্ছেন। এখনো পর্যন্ত কোন সমাধানই তারা করতে পারেনি। আমাদের হলে কোন পানিই নাই এখন। ১,২ দিনের মধ্যে সমস্যার সমাধান করে দিক অথবা আমাদেরকে বাইরে থেকে খাওয়ার পানি সরবরাহ করুক। নাহলে পানি ছাড়া আমরা হলে থাকব কীভাবে”

একই হলের শিক্ষার্থী শেখ সামিরা বলেন, “হলের রাস্তার লাইট প্রায় সময় নষ্ট থাকে, ফলে অন্ধকারে ভয় লাগে। ঝোপঝাড় থেকে সাপ বা অন্য প্রাণী আসার আশঙ্কা থাকে। আশেপাশে ময়লার দুর্গন্ধ ছড়ায়, সবসময় কুকুর ঘোরে— যা ভয়ানক পরিস্থিতি তৈরি করে।” এছাড়াও হলের ইন্টারনেট স্পিড খুবই বাজে। প্রায়ই সময় ইন্টারনেট চলে না। ইন্টারনেট সংক্রান্ত কোন কাজই আমরা ঠিকভাবে করতে পারি না। অনলাইনে ক্লাস থাকলেও তা ইন্টারনেট স্পিডের কারণে ঠিকভাবে ভাবে করা যায় না।

তারপর ক্লিনারের সমস্যা আছে, হল প্রায়ই সময় নোংরা থাকে। ২ জন ক্লিনারে পুরো ৫ তলা হল পরিষ্কার রাখা সম্ভব হয়না। এখন তো হলে বসবাস করা একটা যুদ্ধের মতো লাগে। এতো এতো সমস্যা, কোনো কিছুর সমাধান হয় না।

তাপসী রাবেয়া বশরী হলের প্রভোস্ট ড. শারমিন আক্তার বলেন, “বর্তমানে হলে যে সমস্যাগুলো চলছে, তা নিয়ে আমি খুবই উদ্বিগ্ন। পানির সমস্যার জন্য আমি ইতোমধ্যে ভিসি স্যার বরাবর দরখাস্ত দিয়েছি। উনি ইঞ্জিনিয়ারিং টিম পাঠিয়েছেন— আশা করছি দুই–তিন দিনের মধ্যেই সমস্যাগুলোর সমাধান হয়ে যাবে। ভিসি স্যার নিজেও হলে এসে দেখে গেছেন পুরো বিষয়টা।

নতুন মোটর খুব দ্রুত লাগানো হবে, তখন খাওয়ার পানির সমস্যাও সমাধান হবে। হলের রাস্তার লাইটগুলো বারবার নষ্ট করা হয়, তাই এবার আমরা এমনভাবে লাইট বসানোর পরিকল্পনা করছি যাতে সহজে ভাঙা না যায়।

ক্লিনার নিয়োগ এখনই সম্ভব নয়, তবে প্রতিদিন হল পরিষ্কার রাখার ব্যবস্থা করা হবে। নিরাপত্তা ও আলোর বিষয়টিও দ্রুত সমাধান করা হবে ইনশাআল্লাহ।

ইন্টারনেট সমস্যা নিয়েও আমি আইটি দপ্তরে আগেও চিঠি দিয়েছি, আবারও দেবো। শিক্ষার্থীদের সুবিধার্থে বেশ কিছু উন্নয়নমূলক কাজ হাতে নেয়া হয়েছে। সর্বোপরি শিক্ষার্থীদের যেন কোনো অসুবিধা না হয়, সে ব্যাপারে আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি।”

যতদিন যাচ্ছে হলের সমস্যা গুলো তীব্র থেকে তীব্র আকার ধারণ করছে। বিশেষ করে পানির সমস্যা নিয়ে রীতিমতো ক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা। কোনো আশ্বাস নয়। দ্রুত সব সমস্যার সমাধান চান তারা

পোস্টটি সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

এই ক্যাটাগরির আরও নিউজ
© All rights reserved © 2025 Barisal Crime Trace
Theme Customized By Engineer BD Network