
নিজস্ব প্রতিবেদক : বুধবার রাতে ও বৃহস্পতিবার দুপুরে নৌ-বাহিনী ও মৎস্য বিভাগ বিভাগের জব্দ করা ১৫০০ কেজি জাটকা আমতলী থানায় রাখা হয়েছিল।
বরগুনার আমতলী থানা থেকে নৌ-বাহিনী ও উপজেলা মৎস্য বিভাগের জব্দ করা দেড় হাজার কেজি জাটকা মাছ লুট করে নিয়ে গেছে স্থানীয়রা।
বৃহস্পতিবার বিকাল ৩টার দিকে আমতলী থানা কম্পাউন্ডে স্থানীয় ৫০টি মাদ্রাসা-এতিমখানায় বিতরণের সময় মাছগুলো অন্যরা লুট করে নিয়ে যায় বলে জানিয়েছেন থানার ওসি দেওয়ান জগলুল হাসান।
মাছ লুট হওয়ার একটি ভিডিও মুহূর্তের মধ্যে ছড়িয়ে পড়েছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। সেখানে প্রকাশ্যে দিবালোকে এভাবে ‘এতিমদের হক’ লুটের ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন অনেকে।
স্থানীয় ও এতিমখানার প্রতিনিধিরা বলেন, গত ১ নভেম্বর থেকে সাগর ও নদীতে জাটকা (ইলিশ) শিকার করা নিষিদ্ধ। কিন্তু সরকারি নির্দেশনা উপেক্ষা করে তালতলী, কলাপাড়া ও আমতলী উপজেলার অসাধু জেলেরা জাটকা শিকার করছেন।
সেসব জাটকা বৃহস্পতিবার দুপুরে চারটি গাড়িতে ঢাকাসহ বিভিন্ন এলাকায় পাচার সময় অভিযান চালিয়ে জব্দ করে নৌ-বাহিনীর সদস্য ও উপজেলা মৎস্য বিভাগ। এছাড়া বুধবার রাতেও বেশকিছু মাছ জব্দ করা হয়। জব্দ করা মাছগুলি তারা আমতলী থানায় মজুদ রাখেন।
পরে বৃহস্পতিবার বিকালে মাছগুলো স্থানীয় মাদ্রাসা-এতিমখানার মধ্যে বিতরণের উদ্যোগ নেওয়া হয়। কিন্তু হঠাৎ দুই শতাধিক মানুষ থানা কম্পাউন্ডের ভেতরে প্রবেশ করে মাছগুলো লুট করে নিয়ে যায়।
স্থানীয় সংবাদকর্মী এইচ এম রাসেল মিয়ার অভিযোগ বলেন, “উপজেলা প্রশাসন সঠিকভাবে মাছ বিতরণ করলে এমন হতো না। তাদের গাফলতির কারণেই এমন ঘটনা ঘটেছে। পুলিশের সামনে জাটকা ইলিশ লুট হলেও তারা কোনো ব্যবস্থা নেয়নি।
প্রত্যক্ষদর্শী গাজী নাসির উদ্দিনসহ বেশ কয়েকজন বলেন, আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সামনে এমন ঘটনা মেনে নেওয়া যায় না। উপজেলা প্রশাসন যদি সঠিকমত বণ্টন করলে এমন হতো না। ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের আইনের আওতায় এনে শাস্তির দাবি জানান তিনি।
আমতলী উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা তন্ময় কুমার বলেন, “আমি প্রশিক্ষণে আছি। জব্দকৃত ১৫০০ কেজি মাছ ৫০টি এতিম খানায় বিতরণ কালে অপরিচিতি শতাধিক লোকজন এসে মাছ লুট করে নিয়েছে।
আমতলী থানার ওসি দেওয়ান জগলুল হাসান বলেন, “জব্দ করা অর্ধেক মাছ সঠিকভাবে বণ্টন করা হয়েছে। বাকী অর্ধেক মাছ মানুষ নিয়ে গেছে। আমি ঠেকানোর চেষ্টা করেও পারিনি।
আমতলী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রোকনুজ্জামান খান বিষয়টি তার ‘জানা নেই’ বলে দাবি করেন। তবে তিনি বলেন, “থানা একটি সুরক্ষিত জায়গা, সেখান থেকে মাছ লুট হওয়ার প্রশ্নই আসে না। তারপরও যদি লুট হয়ে থাকে জড়িতদের বিরুদ্ধে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।