
নিজস্ব প্রতিবেদক : বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)-এর জাতীয় নির্বাহী কমিটির ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক রফিকুল ইসলাম জামাল বলেছেন, ১৯৭২ সালের পর দেশে বহু মুক্তিযোদ্ধাকে হত্যা করে ইতিহাস বিকৃত করা হয়েছে। তিনি বলেন, মুক্তিযুদ্ধের বীর সেনানায়ক মেজর (অব.) আব্দুল জলিলকেও গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। যারা ১৯৭১ সালে আলবদর ও রাজাকার হিসেবে মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতা করেছে, তাদের কোনো ক্ষমা নেই—তারা এ দেশের মাটি ও মানুষের শত্রু।
সোমবার (১০ নভেম্বর) দুপুরে ঝালকাঠির রাজাপুর উপজেলার বড়ইয়া ডিগ্রি কলেজে ২০২৫-২৬ শিক্ষাবর্ষের নবীনবরণ ও সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। রফিকুল ইসলাম জামাল বলেন, পাকিস্তানিদের হাতে আমাদের মা-বোনদের তুলে দিয়েছিল এরা। খুন, ধর্ষণ ও লুটপাট চালিয়েছে। আজও ইসলামের নামে তারা মানুষের মগজ ধোলাই করছে, জান্নাতের সার্টিফিকেট দিচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, বিএনপি আমলে পদ্মা সেতুর ব্যয় ছিল সাড়ে ১২ হাজার কোটি টাকা, অথচ আওয়ামী লীগ সরকার এসে ৪০ হাজার কোটি টাকায় কাজ করেছে। এখানেই দুর্নীতির প্রমাণ। বিএনপি দেশের মানুষকে ভালোবাসে, উন্নয়ন চায়। তাই আগামী নির্বাচনে ধানের শীষে ভোট দিয়ে দেশকে মুক্ত করতে হবে।
রফিকুল ইসলাম জামাল অভিযোগ করে বলেন, ১৯৭২ থেকে ১৯৭৫ সাল পর্যন্ত প্রায় ২৩ হাজার মুক্তিযোদ্ধাকে হত্যা করা হয়, দেশের সম্পদ লুট করে নিয়ে যায় ভারতীয় সেনারা। সর্বহারা জনগণের নেতা সিরাজ শিকদার ছিলেন সাধারণ মানুষের আশ্রয়স্থল, কিন্তু আওয়ামী লীগ তাঁকেই হত্যা করে দেশে বিচারবহির্ভূত হত্যার সূচনা করে। শেখ মুজিবুর রহমান একদলীয় শাসনব্যবস্থা চালু করেছিলেন, পক্ষান্তরে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান এ দেশে বহুদলীয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছিলেন—যার কারণে তাকেও হত্যা করা হয়।
তিনি আরও বলেন, ১৯৭১ সালে যুদ্ধ চলাকালীন সময়ে পাকিস্তানিরা জিয়াউর রহমানের পরিবারকে জিম্মি করেছিল, কিন্তু তবুও জিয়া মুক্তিযুদ্ধ থেকে সরে দাঁড়াননি। পরিবার জিম্মি থাকা সত্ত্বেও তিনি দেশের স্বাধীনতার জন্য লড়ে গেছেন।
অনুষ্ঠানে বড়ইয়া ডিগ্রি কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ গাজী জসীমউদ্দিনের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা বিএনপির সভাপতি তালুকদার আবুল কালাম আজাদ, সিনিয়র সহ-সভাপতি আব্দুল হক নান্টু, রাজাপুর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতির সভাপতি মো. জাহিদুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক বাহাউদ্দীন বাচ্চু, বড়ইয়া ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি শাহ মোহাম্মদ ফারুকসহ উপজেলা ও ইউনিয়ন বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতা-কর্মীরা।
এ সময় কলেজের শিক্ষক-শিক্ষার্থী, এলাকার গুণীজন ও স্থানীয় বিএনপি, যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল এবং ছাত্রদলের বিপুলসংখ্যক নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন।