1. diggilseba@gmail.com : admin :
  2. ashadul@barisalcrimetrace.com : Ashadul Islam : আসাদুল ইসলাম
  3. hafiz@barisalcrimetrace.com : barisal CrimeTrace : barisal CrimeTrace
  4. mahadi@barisalcrimetrace.com : মাহাদী হাসান : মাহাদী হাসান
বানারীপাড়ায় কেরামত আলী খান মৃত্যুর দুই বছর পরে পেলেন বীর মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতি !  - Barisal Crime Trace । বরিশাল ক্রাইম ট্রেস
বুধবার, ১৯ নভেম্বর ২০২৫, ১০:২৯ অপরাহ্ন

বানারীপাড়ায় কেরামত আলী খান মৃত্যুর দুই বছর পরে পেলেন বীর মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতি ! 

  • আপডেট সময় : শুক্রবার, ১৪ নভেম্বর, ২০২৫
রাহাদ সুমন, বিশেষ প্রতিনিধি: বরিশালের বানারীপাড়ায় স্বাধীনতার ৫৪ বছর ও মৃত্যুর দুই বছর পরে সাবেক উপ পুলিশ পরিদর্শক মোঃ কেরামত আলী খান বীর মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতি পেয়েছেন।
শুক্রবার (১৪ নভেম্বর) সকালে মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক মন্ত্রনালয়ের ওয়েবসাইট থেকে সংগ্রহিত মহামান্য রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে উপ-সচিব হরিদাস ঠাকুর স্বাক্ষরিত গেজেটের কপিতে বীর মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে তাঁর নাম দেখতে পেয়ে স্ত্রী ও তিন মেয়েসহ স্বজনরা কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন।
২০২৩ সালের ২০ সেপ্টেম্বর ভোরে ঢাকায় বনশ্রী আল-রাজী হাসপাতালে ক্যান্সার রোগে চিকিৎসাধিন অবস্থায় তিনি মারা যান। তাকে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় দাফনের জন্য তখন বরিশালের তৎকালীণ জেলা প্রশাসক ও বানারীপাড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে পরিবারের পক্ষ থেকে বিনীত অনুরোধ জানানো হয়েছিল।
তবে গেজেটে তাঁর নাম না থাকায় তা সম্ভব হয়নি। ৭১’র রণাঙ্গনের প্রকৃত বীর মুক্তিযোদ্ধা হওয়া স্বত্ত্বেও রাষ্ট্রীয় মর্যাদা ছাড়াই ওই দিন বিকালে বানারীপাড়া কেন্দ্রীয় ঈদগাঁহ মাঠে জানাজা শেষে তার মরদেহ পৌর শহরের ২ নম্বর ওয়ার্ডের বাড়ির আঙিনায় চির নিন্দ্রায় শায়িত করা হয়।
এ নিয়ে তখন দৈনিক সমকাল ও আজকের বাূর্তাসহ বিভিন্ন অনলাইন নিউজ পোর্টালে “আফসোস নিয়ে চলে গেলেন কেরামত আলী খান’ শিরোণামে সংবাদ প্রকাশিত হয়।
শুক্রবার (১৪ নভেম্বর) দুপুরে  প্রয়াত বীর মুক্তিযোদ্ধা কেরামত আলী খানের স্ত্রী জাহানারা কেরামত কান্নাভেজা কন্ঠে দীর্ঘশ্বাস ফেলে বলেন, আজ যদি তাঁর স্বামী বেঁচে থাকতেন মুক্তিযোদ্ধার তালিকায় নিজের নাম দেখে কতইনা খুশি ও আনন্দিত হতেন।
তিনি বলেন, মুক্তিযোদ্ধা তালিকায় নাম অন্তর্ভূক্ত করার জন্য আমৃত্যু তাঁর স্বামী পুলিশের আইজিপি,স্বরাষ্ট্র ও মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক মন্ত্রনালয়,জামুকাসহ সংশ্লিষ্ট দপ্তরে ধরনা দিয়েছেন।
মৃত্যুর আগে মুক্তিযোদ্ধা তালিকায় নিজের নাম দেখে যাওয়ার জন্য তিনি ব্যাকুল ছিলেন। তাঁর স্বামীকে মনে আফসোস নিয়ে চিরতরে চলে যেতে হয়েছে- এ কষ্ট-যন্ত্রনা ও আফসোস গোটা পরিবারকে আজীবন বয়ে বেড়াতে হবে।
তারপরেও বীর মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে তাকে স্বীকৃতি দেওয়ায় সরকারসহ সংশ্লিষ্টদের প্রতি আমরা কৃতজ্ঞ।  কেরামত আলী খানের জ্যেষ্ঠ মেয়ে উপজেলার পূর্ব সলিয়াবাকপুর শেরে বাংলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক আবেগাপ্লুত ও অশ্রুসিক্ত কামরুন্নাহার রুবী স্মৃতিচারণ করে  বলেন, প্রতিবছর  ১৬ ডিসেম্বর মহান বিজয় দিবস এবং ২৬ মার্চ স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবসের কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠানে বাবা যেতেন।
বাসায় ফিরে দীর্ঘশ্বাস ফেলে আফসোস করে বলতেন, অনুষ্ঠানে সকল মুক্তিযোদ্ধাদের ক্রেষ্ট ও ফুলেল শুভেচ্ছায় সিক্ত করে  সংবর্ধনা দেওয়া হয়েছে।
অথচ আমি একজন প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা হয়েও এ সম্মান থেকে বঞ্চিত। আজ যদি বাবা শয্যাশায়ী অবস্থায়ও বেঁচে থেকে তাঁর মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতির খবর শুনতেন দারুন খুশি হতেন,তার চোখে আনন্দ অশ্রু বয়ে যেত। বাবা নেই তার স্বীকৃতি আমাদের কাছে যেমন আনন্দের তেমন আফসোস ও বেদনারও।
প্রসঙ্গত, দেশ মাতৃকাকে রক্ষা ও স্বাধীনতার লাল সূর্য ছিনিয়ে আনতে ৭১’ র মহান মুক্তিযুদ্ধে সন্মুখ সারির যোদ্ধা ছিলেন কেরামত আলী খান।  স্বাধীনতার পরে তিনি পুলিশের চাকরিতে যোগদান করেন।
সেখানে সার্ভিস বুকে তাঁর নামের আগে মুক্তিযোদ্ধা লেখা ছিল। তবে তাঁর নাম মুক্তিযোদ্ধা তালিকায় অন্তর্ভূক্ত ছিলনা। তাঁর আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে মৃত্যুর দুই মাস পূর্বে ২০২৩ সালের ২৬ জুলাই উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা যাচাই কমিটি প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে তাঁর নাম সুপারিশ করে জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিলে প্রতিবেদন পাঠান।
ওই প্রতিবেদনের প্রেক্ষিতে তাঁর নাম মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে গেজেটভূক্ত হয়েছে। এ বিষয়ে বানারীপাড়া উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের আহবায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা আইনুল হক বলেন, কেরামত আলী খান আফসোস নিয়ে চলে গেছেন।
তিনি জীবদ্দশায় এ স্বীকৃতি পেলে খুশি হতেন। মৃত্যুর পরে হলেও তাঁর এ প্রাপ্য স্বীকৃতি পরিবার এবং তাঁর জন্য গৌরব ও সম্মানের।
এ প্রসঙ্গে বরিশাল জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের যুগ্ম আহবায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা মোঃ খলিলুর রহমান চোকদার বলেন, একজন প্রকৃত বীর মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতি পেতে যদি স্বাধীনতার পরে ৫৪ বছর অপেক্ষা করতে হয় সেটা খুবই দুঃখজনক।
আর সেই স্বীকৃতি যদি তাঁর মৃত্যুর পরে মেলে সেটা আরও বেদনাদায়ক। অবশেষে তিনি মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে স্বীকৃতি পাওয়ায় সরকারসহ সংশ্লিষ্টদের ধন্যবাদ জানাই।

পোস্টটি সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

এই ক্যাটাগরির আরও নিউজ
© All rights reserved © 2025 Barisal Crime Trace
Theme Customized By Engineer BD Network