
নিজস্ব প্রতিবেদক : বিআইডব্লিউটিসি’র বহু কাঙ্ক্ষিত ‘পর্যটক সার্ভিসটি’ ২১ নভেম্বর-ও চালু হলো না।
১৫ নভেম্বর বিশ্ব ঐতিহ্যের প্যাডেল চালিত নৌযান ‘পিএস মাহসুদ’র আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন এবং নৌ বিহারকালে নৌ পরিবহন উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অবঃ) শাখায়াত হোসেন ‘২১ নভেম্বর থেকে পর্যটক সার্ভিস হিসেবে নৌযানটি ঢাকা-বরিশাল নৌপথে চলাচল করবে’ বলে ঘোষণা দিয়েছিলেন। আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনের আগে এ মাসের গোড়ার দিকে নৌ পরিবহন উপদেষ্টা ও বিআইডব্লিউটিসি’র ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণ নৌযানটির পরীক্ষামূলক পরিচালনে ভ্রমণকালে ১৫ নভেম্বর থেকে পর্যটক সার্ভিসটি চালু করার কথা জানিয়েছিলেন।
কিন্তু, শেষ পর্যন্ত ১৫ নভেম্বর নৌযানটির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন হলেও শুক্রবার (২১ নভেম্বর) বাণিজ্যিক পরিচালনে পিএস মাহসুদ’র যুক্ত হবার কথা জানিয়েছিলেন নৌ পবিহন উপদেষ্টা সহ সংস্থাটির দায়িত্বশীল মহল। এ লক্ষ্যে সব প্রস্তুতিও গ্রহণ করা হয়েছিল। প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণীর অনেক যাত্রী আসনও সংরক্ষণ করেছিলেন। প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণীর যাত্রী ভাড়া নিয়ে কিছুটা অনিশ্চয়তাও কাজ করছিল। অত্যাধিক ভাড়া নির্ধারণের কারণে যাত্রীদের মধ্যে কিছুটা হতাশাও ছিল।
তবে শেষ পর্যন্ত বিআইডব্লিউটিএ’র নির্ধারিত দরের প্রায় কাছাকাছি ভাড়া নির্ধারণ হয়েছে বলে একটি সূত্র জানিয়েছে। সংস্থাটির জনসংযোগ কর্মকর্তা অবশ্য বৃহস্পতিবার (২০ নভেম্বর) দুপুরে জানান, ‘ভাড়া নির্ধারণের জন্য সংস্থার প্রস্তাবনা অনুমোদন বা দিক নির্দেশনার জন্য মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্ত চাওয়া হয়েছে। সেখান থেকে চূড়ান্ত অনুমোদন বা সিদ্ধান্ত পাওয়া গেলেই আমরা তা প্রকাশ করব।’ তবে অপর এক দায়িত্বশীল সূত্রের মতে পর্যটক সার্ভিস প্রথম শ্রেণীর বাতানুকুল কক্ষে জনপ্রতি ভাড়া ২৬০০ টাকা এবং দ্বিতীয় শ্রেণীর কক্ষে জনপ্রতি ১৮০০ টাকা ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে। এ ভাড়ার মধ্যে যাত্রীর জন্য সৌজন্যমূলক প্রাতরাশ অন্তর্ভুক্ত থাকবে বলেও জানা গেছে। অপরদিকে ডেক শ্রেণীতে প্রাতরাশ সহ ৬০০ টাকা ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে বলে জানা গেছে।
তবে কি কারণে নৌযানটির পূর্ব নির্ধারিত ২১ নভেম্বরের যাত্রা বাতিল করা হলো, তা বলতে রাজি হননি কেউ। বিষয়টি নিয়ে বৃহস্পতিবার (২০ নভেম্বর) সন্ধ্যায় রাষ্ট্রীয় নৌ বাণিজ্য প্রতিষ্ঠান-বিআইডব্লিউটিসি’র চেয়ারম্যান ও অতিরিক্ত সচিব মো. সলিম উল্লাহ’র সাথে তাঁর সেলফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তিনি কোনো সাড়া দেননি।
তবে একটি নির্ভরযোগ্য সূত্রের মতে, যাত্রীভাড়া নির্ধারণে বিলম্ব ছাড়াও বরিশাল বন্দরে বিআইডব্লিউটিসি’র নৌযান পরিচলনের জন্য ঘাট প্রস্তুত না হওয়ায় এ বিপত্তি সৃষ্টি হয়েছে। বরিশাল বন্দরে সংস্থাটির নিজস্ব জমির ওপরই পুরো নৌ বন্দরটি গড়ে উঠলেও সেখানে বিআইডব্লিউটিসি’র নৌযান ভেড়ানো ও ছাড়ার কোনো স্থান নেই এখন। এমনকি সংস্থাটির নৌযান পরিচালনের জন্য বিশ্ব ব্যাংকের প্রকল্পের আওতায় একটি ঘাট তৈরির প্রক্রিয়া অনেক আগে শুরু হলেও তা শেষ হয়নি। শুধুমাত্র স্পার্ড বসান হলেও সেখানে পন্টুন সহ জেটিও নির্মিত হয়নি। ফলে পুরো প্রক্রিয়াটি হোঁচট খেল। এ অবস্থায় সংস্থাটি তাদের নিজস্ব একটি পন্টুন সেখানে মোতায়েন করলেও জেটি বসানো হয়নি। সে লক্ষ্যে কাজ শুরু হলেও নিরাপদ যাত্রী অবতরণ ও আরোহণ নিশ্চিত করতে আরো কয়েকদিন সময় লাগবে বলে জানা গেছে।
ফলে ২১ নভেম্বরের পরিবর্তে ২৮ নভেম্বর থেকে পর্যটকদের নিয়ে ঢাকা-বরিশাল নৌ পথে সপ্তাহে একদিন ‘পিএস মাহসুদ’ চলাচল করবে বলে বৃহস্পতিবার (২০ নভেম্বর) সংস্থাটির পরিচালক-বাণিজ্য আশিকুজ্জামান জানিয়েছেন।