
নিজস্ব প্রতিবেদক// বনজঙ্গল, মশার উপদ্রব, আগাছা, পরিস্কার পরিচ্ছন্নতার অভাব—এগুলো যেন নিত্য দিনের অভিযোগ ছিল বরিশালের মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিতে আসা রোগী ও স্বজনদের। অবশেষে রোগীদের দুর্ভোগের কথা চিন্তা করে সঠিক সিদ্ধান্ত ও পদক্ষেপ নিলেন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মো: ইমরানুর রহমান।
মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায় যে, স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স চত্বরের বিভিন্ন পয়েন্টে পরিস্কার পরিচ্ছন্নতার কাজ চলছে, যার ফলে বেড়েছে হাসপাতালের সৌন্দর্য, কমেছে মশার উপদ্রব এবং স্বস্তি মেলেছে দূর থেকে চিকিৎসা নিতে আসা রোগী ও স্বজনদের। পরিস্কার পরিচ্ছন্নতার পাশাপাশি করা হচ্ছে সৌন্দর্য বর্ধনের কাজও। এতে নতুন রূপ নিচ্ছে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি।
স্থানীয়রা বলেন, ডাঃ মো: ইমরানুর রহমান আসার আগে যত ডাক্তার এসেছে, তারা কেউ হাসপাতাল নিয়ে কখনও এতোটা ভাবেননি। শুধু তাই নয়, হাসপাতালের উন্নয়ন তো দূরের কথা, রোগীদের নিয়েও চিন্তা করার সময় ছিল না তাদের কাছে।
রোগীদের সুচিকিৎসা দেওয়ার ব্যাপারে তাদের দায়বদ্ধতা থাকলেও তা দেখা যায়নি। কিন্তু বর্তমান ডাক্তার ইমরানুর রহমান আসার পর থেকে ধাপে ধাপে হাসপাতালের বিভিন্ন সেক্টরে তিনি নজর দিচ্ছেন। হাসপাতালের অবকাঠামো উন্নয়ন, পরিস্কার পরিচ্ছন্নতা এবং খাবারের মানসহ সব দিকে নজর রয়েছে তার। যা এই উপজেলা বাসীর জন্য মঙ্গলজনক।
দক্ষিণ উলানিয়া থেকে চিকিৎসা নিতে আসা হাসেম রাড়ি নামের এক রোগী বলেন, আগে হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসলে সঠিক সময় সঠিক চিকিৎসা পেতাম না, হাসপাতালের ভেতরকার অবস্থা ছিল নাজুক এবং আশপাশের পরিবেশ ছিল ময়লায় নোংরা। কিন্তু এখন কয়েকদিন ধরে দেখা যাচ্ছে হাসপাতালটির পরিবেশ অনেকটা নতুন রূপ ধারণ করছে। চিকিৎসা সেবার মানও আগের চেয়ে অনেকটা ভালো।
দরিচর খাজুরিয়া ইউনিয়ন থেকে আসা গর্ভবতী রোগী এলিন বেগম বলেন, হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসলে প্রথমেই অনেকগুলো টেস্টের কাগজ ধরিয়ে দিতেন ডাক্তাররা বাহির থেকে করে নিয়ে আসার জন্য। সরকারি ভাবেও তেমন কোনো ঔষধ পেতাম না, সঠিক পরামর্শ দেওয়া হতো না এখানে। হাসপাতালে ভর্তি থাকার মতো পরিবেশ ছিল না, এখন পরিবেশ অনেকটা ভালো হয়েছে আগের চেয়ে।
এ ব্যাপারে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ইউএইচ এন্ড এফপিও মোঃ ইমরানুর রহমান বলেন, আমি হাসপাতালে জয়েন করার পর দেখি আশেপাশের পরিবেশের অবস্থা খুবই ভয়াবহ এবং মশার উপদ্রব, আশেপাশে ময়লা আবর্জনায় ভরপুর। শুধু তাই নয়, সামনে থেকে দেখলে মনে হতো না, এটা একটি চিকিৎসা সেবা প্রদানকারী কার্যলয়।
আপাতত হাসপাতালটির পরিস্কার-পরিচ্ছন্নতা সহ ছোট ছোট বিষয়গুলোর দিকে নজর দিচ্ছি। এর পরে ধাপে ধাপে হাসপাতালের অনিয়মগুলো শুধরে সকল বিষয়ে ধাপে ধাপে হাত দেওয়া হবে।
তিনি আরো বলেন, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের উচিত সব সময় হাসপাতাল এরিয়া পরিস্কার পরিচ্ছন্ন রাখা, যা বিগত দিনে করা হতো না। তাই এগুলোর দিকে প্রথমেই নজর দিলাম। সাথে চিকিৎসার মানকে আরো উন্নত করার চেষ্টা চলছে, ইনশাআল্লাহ।
মেহেন্দিগঞ্জবাসীর সার্বিক সহযোগিতা ও আন্তরিকতা পেলে এখানেই আরো ভালো চিকিৎসার ব্যবস্থা করা যাবে বলে জানান ডাক্তার মোঃ ইমরানুর রহমান।