1. diggilseba@gmail.com : admin :
  2. ashadul@barisalcrimetrace.com : Ashadul Islam : আসাদুল ইসলাম
  3. hafiz@barisalcrimetrace.com : barisal CrimeTrace : barisal CrimeTrace
  4. mahadi@barisalcrimetrace.com : মাহাদী হাসান : মাহাদী হাসান
প্রাণ ফিরে পেয়েছে বরিশাল মহানগরীর অক্সিজেন কারখানা বেল’স পার্ক - Barisal Crime Trace । বরিশাল ক্রাইম ট্রেস
শুক্রবার, ২১ নভেম্বর ২০২৫, ০৭:০২ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম
পটুয়াখলীতে ইয়াবাসহ যুবক আটক, ছয় মাসের কারাদণ্ড কাউখালীতে নবান্ন উৎসব অনুষ্ঠিত পিরোজপুরে দুই সাংবাদিকের ওপর হামলার পাঁচদিন পার হলেও গ্রেফতার হয়নি কেউ নির্যাতন করে আমার হাতের আঙ্গুল ভেঙে দেয়া হয় : আগৈলঝাড়ায় ইঞ্জিনিয়ার সোবহান বানারীপাড়া উপজেলায় তাঁতীদলের ৩১ সদস্যের আহ্বায়ক কমিটি অনুমোদন ইন্দুরকানীতে স্থায়ীত্বশীল তামাক নিয়ন্ত্রণে সমন্বিত উদ্যোগ জরুরী বিষয়ক সভা বাকেরগঞ্জে জমি নিয়ে বিরোধে বসতবাড়িতে হামলা-ভাঙচুর মুলাদীতে শিক্ষার্থীরা পেল অর্থসহ কুরআন শরীফ ফরচুন-বরিশাল ডিআরইউ মিডিয়া ক্রিকেট : অঘটনের শিকার প্রতিদিনের বাংলাদেশ জলবায়ু সংকট মোকাবিলায় তালতলীতে নৌ র‍্যালি: গ্যাস সম্প্রসারণ বন্ধের দাবি

প্রাণ ফিরে পেয়েছে বরিশাল মহানগরীর অক্সিজেন কারখানা বেল’স পার্ক

  • আপডেট সময় : রবিবার, ১৪ সেপ্টেম্বর, ২০২৫

নিজস্ব প্রতিবেদক, বরিশাল : নগর প্রশাসকের সরাসরি তত্ত্বাবধানে শনিবার রাতভর বরিশাল মহানগরীর শ্রান্তি–বিনোদনের প্রাণকেন্দ্র বেল’স পার্ক থেকে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়েছে। ফলে নগরীর সর্ববৃহৎ এ উদ্যানটির চারপাশসহ অভ্যন্তরভাগে এখন সর্বস্তরের মানুষ বুক ভরে নিঃশ্বাস নিতে পারছেন। নগর প্রশাসনের এ উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন সাধারণ মানুষও।

তবে নগরীর নবগ্রাম রোড–চৌমহনী লেকের দক্ষিণ ও পশ্চিম পাড়, বিবির পুকুরের দক্ষিণ পাড়, আমতলা মোড়ের স্বাধীনতা পার্ক এবং ত্রিশ গোডাউন সংলগ্ন ‘শতায়ু অঙ্গন’-এর মতো নগরীর অনেক শ্রান্তি–বিনোদন কেন্দ্র এখনো অবৈধ দখলদারদের কব্জায় রয়েছে। নগরীকে এসব স্থাপনা অবৈধ দখলমুক্ত রাখতে অবিলম্বে আরও নিবিড় কর্মসূচি গ্রহণের তাগিদ দিয়েছেন সর্বস্তরের মানুষ।

এমনকি বরিশাল মহানগরীর ‘প্রাকৃতিক হৃদস্পন্দন’ খ্যাত বেল’স পার্কের সর্বনাশ ঠেকাতে অনেক আগে থেকেই পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানিয়ে আসছিলেন নগরীর সাধারণ মানুষ ও প্রকৃতিপ্রেমীরা। কিন্তু নানা বাধার কারণে তা এতদিন হয়ে ওঠেনি।

শেষ পর্যন্ত বেল’স পার্ক থেকে সব অবৈধ স্থাপনা অপসারণ করাকে ইতিবাচকভাবেই দেখছেন নগরবাসী। শনিবার রাতভর উচ্ছেদ অভিযানে নগর ভবনের বিপুল সংখ্যক পরিচ্ছন্নতা কর্মী ছাড়াও দৈনিক মজুরি ভিত্তিক কর্মচারীরা অংশ নেন।

রোববার সকালে নগর প্রশাসক ও বিভাগীয় কমিশনার মো. রায়হান কাসেম সরেজমিনে বেল’স পার্ক ঘুরে দেখে সন্তোষ প্রকাশ করেন। সাধারণ মানুষ বেল’স পার্কের অনুরূপ অভিযানের মাধ্যমে নগরীর স্বাধীনতা পার্ক, মুক্তিযোদ্ধা পার্ক, নবগ্রাম রোড–চৌমহনী লেকের চারপাশসহ শতায়ু অঙ্গনকে অবৈধ স্থাপনা ও জঞ্জালমুক্ত করার দাবি জানিয়েছেন।

রোববার বিকেলে বেল’স পার্কের ওয়াকওয়েতে হাঁটতে আসা একাধিক ভ্রমণকারীও নগর প্রশাসকের এ উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়ে অবিলম্বে অন্যান্য শ্রান্তি–বিনোদনের কেন্দ্রগুলো অবৈধ দখলমুক্ত করার দাবি করেন।

১৯৬৬ সালে বরিশাল স্টেডিয়াম নির্মাণের আগে পর্যন্ত এই বেল’স পার্কেই তৎকালীন বৃহত্তর বাকেরগঞ্জ জেলার ফুটবল লিগসহ সব ধরনের খেলাধুলা এবং বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হতো।

পাশাপাশি বিভিন্ন জাতীয় দিবসের কুচকাওয়াজও এ ময়দানেই অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে। এখনো প্রতিবছর মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবসসহ বিজয় দিবসে সম্মিলিত কুচকাওয়াজ বেল’স পার্কেই অনুষ্ঠিত হয়।

ব্রিটিশ আমলের শেষদিকে তৎকালীন বরিশাল তথা বৃহত্তর বাকেরগঞ্জ জেলার জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ‘মি. বেল’ বগুড়া–আলেকান্দা মৌজার চাঁদমারী এলাকায় প্রায় ৯ একর জমির ওপর একটি মুক্ত উদ্যান ও তার দু’পাশ ঘিরে লেক খনন করেন। তখন তার নাম অনুসারেই উদ্যানটির নামকরণ হয় ‘বেল’স পার্ক’।

গণপূর্ত অধিদপ্তর এ পার্কটির মালিকানা ও তত্ত্বাবধানের দায়িত্বে থাকলেও বছর কয়েক আগে উদ্যানটির দু’পাশে জেলা প্রশাসন থেকে নকশা–খচিত বিশাল প্রস্তরখণ্ডে ভূমির মালিক ‘বাংলাদেশ সরকারের পক্ষে জেলা প্রশাসক’ বলে উল্লেখ করা হয়েছে। তবে এ ময়দানের উন্নয়ন ও রক্ষণাবেক্ষণে জেলা প্রশাসনের কোনো ভূমিকা নেই।

২০০৪ সালে প্রথম নির্বাচিত সিটি মেয়র মুজিবুর রহমান সারোয়ারের উদ্যোগে সরকারি প্রায় ১ কোটি টাকায় গণপূর্ত অধিদপ্তরের মাধ্যমে উদ্যানটির চারপাশে ওয়াকওয়ে, বসার বেঞ্চ, ছাতা, শৌচাগার ও বিশ্রামাগার নির্মাণ ছাড়াও দৃষ্টিনন্দন লাইট বসানো হয়। পাশাপাশি শোভা বৃদ্ধির জন্য পুরো মাঠের ওয়াকওয়ের মাঝখানে ও চারপাশে গাছ লাগানো হয়েছিল।

সে সময় থেকে উদ্যানটির পরিচ্ছন্নতা ও রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব নেয় সিটি করপোরেশন। প্রতিদিনই নগরীর বিপুল সংখ্যক মানুষ এ উদ্যানে সকাল–বিকেলে হাঁটতে ও বিনোদনে আসা শুরু করেন। তবে ১/১১ সরকার ক্ষমতায় আসার পর অজ্ঞাত কারণে এখান থেকে সব ‘গার্ডেন লাইট’ খুলে নেওয়ায় ভুতুরে পরিবেশ ও নিরাপত্তাহীনতার কারণে সান্ধ্য ভ্রমণকারীরা এ উদ্যান থেকে মুখ ফিরিয়ে নিতে শুরু করেন।

২০১১ সালে তৎকালীন সিটি মেয়র শওকত হোসেন হিরন তহবিল সংগ্রহ করে গণপূর্ত অধিদপ্তরের মাধ্যমে উদ্যানটিতে দ্বিতীয় ওয়াকওয়ে নির্মাণসহ পূর্বপাশে মুরাল স্থাপন করেন। পাশাপাশি উদ্যানটির পূর্ব পাশের নালাটি সংস্কার করে সেখানে শাপলার আবাদ ছাড়াও সংলগ্ন বাঁধরোডে পাকা ফুটপাথ নির্মাণ ও পাশে সোনালু গাছ লাগানো হয়, যা এখনো নগরবাসীর দৃষ্টি আকর্ষণ করে।

দ্বিতীয় দফায় সংস্কারের পর উদ্যানটিতে প্রাতঃ ও বৈকালিক ভ্রমণকারীর সংখ্যা আরও বৃদ্ধি পেলেও গত কয়েক বছর ধরে ভ্রমণকারীর তুলনায় আড্ডাবাজদের ভিড় বাড়তে থাকে। সাথে দিনরাত উদ্যানটির পুরো এলাকাই থাকত কিশোর গ্যাংয়ের দখলে।

স্থানীয় এক কাউন্সিলরের তত্ত্বাবধানেই উদ্যানটির উত্তর পাশে অবৈধ দোকানপাট গজিয়ে উঠতে শুরু করে। পুরো পার্ক জুড়ে নানা ধরনের পথ–খাবারের দোকান আড্ডাবাজদের জন্য বাড়তি সুবিধা সৃষ্টি করছিল।

এমনকি এ উদ্যানে কিশোর গ্যাংয়ের হামলায় বছরখানেক আগে এক পুলিশ কর্মকর্তার স্ত্রী পর্যন্ত শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত হন। তবে নগরবাসীর দীর্ঘ দিনের দাবির প্রেক্ষিতে শেষ পর্যন্ত অবৈধ দখলমুক্ত হওয়ায় বেল’স পার্ক তার অতীত ঐতিহ্য ফিরে পাবে বলেই আশা করছেন নগরবাসী।

পোস্টটি সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

এই ক্যাটাগরির আরও নিউজ
© All rights reserved © 2025 Barisal Crime Trace
Theme Customized By Engineer BD Network