1. diggilseba@gmail.com : admin :
  2. ashadul@barisalcrimetrace.com : Ashadul Islam : আসাদুল ইসলাম
  3. hafiz@barisalcrimetrace.com : barisal CrimeTrace : barisal CrimeTrace
  4. mahadi@barisalcrimetrace.com : মাহাদী হাসান : মাহাদী হাসান
বরিশালে নিয়োগ ছাড়াই ১৬ বছর সরকারি দপ্তরে চাকরি! - Barisal Crime Trace । বরিশাল ক্রাইম ট্রেস
শুক্রবার, ২১ নভেম্বর ২০২৫, ০৩:২৪ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম
পটুয়াখলীতে ইয়াবাসহ যুবক আটক, ছয় মাসের কারাদণ্ড কাউখালীতে নবান্ন উৎসব অনুষ্ঠিত পিরোজপুরে দুই সাংবাদিকের ওপর হামলার পাঁচদিন পার হলেও গ্রেফতার হয়নি কেউ নির্যাতন করে আমার হাতের আঙ্গুল ভেঙে দেয়া হয় : আগৈলঝাড়ায় ইঞ্জিনিয়ার সোবহান বানারীপাড়া উপজেলায় তাঁতীদলের ৩১ সদস্যের আহ্বায়ক কমিটি অনুমোদন ইন্দুরকানীতে স্থায়ীত্বশীল তামাক নিয়ন্ত্রণে সমন্বিত উদ্যোগ জরুরী বিষয়ক সভা বাকেরগঞ্জে জমি নিয়ে বিরোধে বসতবাড়িতে হামলা-ভাঙচুর মুলাদীতে শিক্ষার্থীরা পেল অর্থসহ কুরআন শরীফ ফরচুন-বরিশাল ডিআরইউ মিডিয়া ক্রিকেট : অঘটনের শিকার প্রতিদিনের বাংলাদেশ জলবায়ু সংকট মোকাবিলায় তালতলীতে নৌ র‍্যালি: গ্যাস সম্প্রসারণ বন্ধের দাবি

বরিশালে নিয়োগ ছাড়াই ১৬ বছর সরকারি দপ্তরে চাকরি!

  • আপডেট সময় : সোমবার, ৮ সেপ্টেম্বর, ২০২৫

অনলাইন ডেস্ক// স্বৈরাচার আওয়ামী লীগের শাসনামলে সরকারি দপ্তরগুলোতে অনিয়ম-দুর্নীতি যে জেঁকে বসেছিল তার একটি জ¦লন্ত উদাহরণ বরিশাল জোনাল সেটেলমেন্ট অফিস। গত বছরের ৫ আগস্ট সরকার পরিবর্তনের পরে অন্য সব দপ্তরের মতো এই অফিসেও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ব্যাপক রদবদল হয়। কিন্তু তারপরও ভূমি মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন এই অফিসটিতে অনিয়ম-দুর্নীতি বন্ধ করা সম্ভব হয়নি। বরং যত দিন গড়াচ্ছে তত এই অফিসটির অভ্যন্তরীণ অনিয়ম-দুর্নীতি প্রকাশ্যে আসছে। এবার এমন একটি তথ্য-উপাত্ত সামনে এসেছে, যা শুনে অনেকেরই চক্ষু চড়কগাছ।

 

বরিশাল শহরের লঞ্চঘাট সংলগ্ন পোর্টরোডের এই অফিসটিতে গত ১৬ বছর নিয়োগ ছাড়াই চাকরি করেন বিকাশ মন্ডল নামের ষাটোর্ধ্ব ব্যক্তি। তার কাছেই থাকত অফিসের চাবি এবং তিনি দপ্তরের বিভিন্ন রুমে প্রবেশ করে কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে গুরুত্বপূর্ণ নথিপত্র ঘাটাঘাটিও করতেন। ছদ্মবেশধারী এই ব্যক্তি সরকারিভাবে কোনো বেতন না পেলেও ঘুষের টাকায় মেটানো হতো তার চাহিদা। দীর্ঘদিনের অনুসন্ধানে এই চ্যাঞ্চল্যকর অনিয়ম-দুর্নীতির খবর প্রকাশ্যে আসার পরে বিকাশ মন্ডলকে কৌশলে অফিস থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে।

 

অনুসন্ধানী সূত্র জানিয়েছে, বিকাশ মন্ডল নামের এই ব্যক্তি শুক্র-শনি সাপ্তাহিক ছুটির দিন বাদে প্রতিদিন গোটা জোনাল সেটেলমেন্টের অফিস চষে বেড়াতেন। কর্মকর্তাদের কাছাকাছি থেকে তাদের কাজে সহযোগিতা করাসহ সেবা গ্রহিতাদের সাথে কর্মকর্তাদের আর্থিক রফাদফা করিয়ে দিতেন। দপ্তরের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ কক্ষের চাবিও থাকত তার কাছে। সর্বশেষ তিনি সদর উপজেলার সার্ভেয়ার আ স ম রাসেলের আশ্রয়-প্রশ্রয়ে কাজ করছিলেন।

 

গত সপ্তাহে এই ব্যক্তিকে সেটেলমেন্ট অফিসের নিচতলার রেকর্ড রুমের ভেতরে প্রবেশ করে নথিপত্র ঘাটাঘাটি করতে দেখা যায়। সেখান থেকে তিনি বের হয়ে সার্ভেয়ার রাসেলের রুমে প্রবেশ করে তার কাজে সহযোগিতা করতে দেখা গেছে। এই পুরো ঘটনার একটি ভিডিওচিত্র প্রতিবেদকের কাছে সংরক্ষিত আছে। গত সপ্তাহে এই ছলচাতুরি ধরা পড়ার পরে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ না করে বিকাশকে কৌশলে অফিস থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়।

 

সূত্র জানিয়েছে, বিকাশ নামের এই ব্যক্তি প্রথমে সেটেলমেন্ট অফিসে দালালি করতেন। সেবাগ্রহিতাদের কাছ থেকে অর্থ নিয়ে তা দিয়ে অসাধু কর্মকর্তাদের ম্যানেজ করে আইনসিদ্ধ নয়, এমন কাজগুলো করিয়ে নিতেন। আওয়ামী লীগ শাসনামলের শুরুর দিকে তিনি ছদ্মবেশে অফিসে ঢুকে পড়েন। এরপর থেকে তিনি নিজেকে অফিস সহায়ক পরিচয় দিতেন এবং কর্মকর্তাদের সাথে ওঠাবসা করেন। একপর্যায়ে তিনি কর্মকর্তাদের অবৈধ উপার্জনের একটি মাধ্যম হয়ে ওঠেন। ফলে আওয়ামী লীগের শাসনামলে তার প্রতি কর্মকর্তাদের সুনজরও দেখা যায়।

 

অভিযোগ আছে, বিকাশ কর্মকর্তাদের আস্থাভাজন হওয়ায় বিগত সময়ে তাকে নিয়ে অফিসের কেউ টুঁ-টা শব্দ করেনি। বরং তার সাথে সখ্য রেখে একাধিক কর্মকর্তা ব্যাপক অর্থকড়ি কামিয়েছেন, বিকাশও হয়েছেন ক্রোড়পতি। সার্ভেয়ার রাসেলও সবকিছু যেন শুনে অনুরূপ পদাঙ্ক অবলম্বন করতে চাইছিলেন। কিন্তু বিধিবাম। অনুসন্ধান রাসেলের এই পরিকল্পনায় জল ঢেলে দিয়েছে।

 

সার্ভেয়ার রাসেলের উপস্থিতিতে বিকাশের কাছে তার পরিচয় জানতে চাওয়া হলে তিনি নিজেকে প্রথমে অফিস সহায়ক পরিচয় দিলেও পরবর্তীতে অস্বীকার করেন। তার বেতন কোথা থেকে আসছে জানতে চাইলে সার্ভেয়ার রাসেল বলেন, বিকাশ নিয়োগ ছাড়া কাজ করেন বিষয়টি আগের কর্মকর্তারাও জানতেন। এখন যারা আছেন তারাও জানেন এবং বিকাশের বেতন প্রকল্প করে দেওয়া হচ্ছে বলে জানান। যখন সার্ভেয়ার রাসেলের সাথে এ প্রতিবেদকের আলোচনা চলছিল, ঠিক তখনো বিকাশকে ফাইলপত্র সরবরাহ করতে দেখা যায়।

 

নিয়োগ ছাড়া বহিরাগত ব্যক্তি সরকারি দপ্তরে ১৬ বছর ধরে কাজ করেনÑ এই বিষয়ে জানতে জোনাল সেটেলমেন্ট মৃধা মো. মোজাহিদুল ইসলাম এবং সহকারী সেটেলমেন্ট অফিসার নুরুল আমিন শিকদারের সাথে যোগাযোগ করা হলে তারা উভয়ে নতুন যোগদানের কথা জানিয়েছেন। তারা বলেন, বিষয়টি সম্পর্কে দুজন মোটেও ওয়াকিবহাল ছিলেন না। তবে সংবাদকর্মীর মাধ্যমে যেদিন বিষয়টি সম্পর্কে জানতে পেরেছেন, সেদিনই ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।

 

ছদ্মবেশী বিকাশ অফিসের কোনো ফাইলপত্র এদিক-সেদিক করেছেন কী না এবং তাকে অফিস করার কে অনুমতি দিয়েছেন- এই প্রশ্নের কোনো উত্তর দুই কর্মকর্তার কেউ দিতে পারেননি। বহিরাগত ব্যক্তির মাধ্যমে অফিসের ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনার কথা স্বীকার করলেও বিকাশ বা তাকে আশ্রয়-প্রশ্রয় দেওয়া সার্ভেয়ার রাসেলের বিরুদ্ধে গত এক সপ্তাহেও আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি জোনাল সেটেলমেন্ট কর্তৃপক্ষ, যা নিয়ে দপ্তরটির অপরাপর কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্যে কানাঘুষা চলছে।

 

এই বিষয়টি নিয়ে সংক্ষুব্ধ কর্মচারীদের একটি অংশ বলছেন, কোনো ধরনের নিয়োগ ছাড়া একজন বহিরাগত কীভাবে সরকারি দপ্তরে কাজ করেন এবং তার পক্ষে সার্ভেয়ার রাসেল সাফাই গাইলেন, তা রীতিমতো সবাইকে হতবাক করে দিয়েছে। কিন্তু আরও অবাক করেছে, এই ছলচাতুরি ধরা পড়ার পরেও অভিযুক্তকে আইনে সোপর্দ না করায়। তাদের ভাষায়, বিষয়টির নিরপেক্ষ তদন্ত করে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা উচিত।

পোস্টটি সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

এই ক্যাটাগরির আরও নিউজ
© All rights reserved © 2025 Barisal Crime Trace
Theme Customized By Engineer BD Network