
নিজস্ব প্রতিবেদক, বরিশাল: সরকারি গাছ কাটার অভিযোগে সমালোচনার মুখে পরা বরিশালের গৌরনদী উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সিনিয়র যুগ্ম-আহবায়ক শফিকুল ইসলাম রোকনকে দল থেকে বহিস্কার করা হয়েছে। মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় বরিশাল জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের দায়িত্বপ্রাপ্ত দপ্তর সম্পাদক জাহিদুল ইসলাম খান বাপ্পি স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তি থেকে এ তথ্য জানা যায়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গ ও সংগঠনের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করার সুস্পষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে রোকনকে প্রাথমিক সদস্য পদসহ সকল পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে দলীয় নেতাকর্মীদের তার সঙ্গে কোনো ধরনের যোগাযোগ না রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
রোকনের বহিষ্কারের বিষয়টি নিশ্চিত করে বরিশাল জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি নিজামুর রহমান নিজাম বলেন, রোকন দলীয় শৃঙ্খলা পরিপন্থী কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার সুস্পষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতেই এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
দলীয় প্রভাব খাটিয়ে গত ৭ সেপ্টেম্বর দিবাগত রাতে উপজেলার টরকী বন্দরের ছাগলহাট সংলগ্ন হাজী আবুল হোসেনের বাড়ির সামনে সরকারি সড়কের পাশে সাতটি গাছ শ্রমিক দিয়ে কাটেন রোকন। খবর পেয়ে থানা পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে কর্তনকৃত গাছ জব্দ করে।
এ ঘটনায় স্থানীয়দের মাঝে ক্ষোভের সৃষ্টি হলে ১১ সেপ্টেম্বর রোকনকে দল থেকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয় এবং তাকে লিখিত জবাব ও সরাসরি উপস্থিত হতে বলা হয়। কিন্তু জবাব সন্তোষজনক না হওয়ায় এবং তদন্ত চলাকালীন অবস্থায়ই শনিবার সন্ধ্যায় রোকন তার সমর্থকদের দিয়ে নিজের পক্ষে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ কর্যন। এতে পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে ওঠে।
রোকনের সমর্থকরা টরকী বাসস্ট্যান্ড ও বন্দর এলাকায় প্রকাশ্যে মিছিল করে তাকে ষড়যন্ত্রের শিকার আখ্যা দেয়। প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয়রা জানান, ওই মিছিলে স্থানীয় কুখ্যাত মাদক ব্যবসায়ীদেরও অগ্রভাগে দেখা গেছে। যা সাধারণ মানুষের মধ্যে আরও আতঙ্ক সৃষ্টি করে।
রোকন বলেন, আমার শুভাকাঙ্ক্ষী ও সহকর্মীরা আমার পক্ষে একটি মিছিল বের করেছে জানতে পেরে আমি তাৎক্ষণিকভাবে তাদের ফোন করে মিছিল বন্ধ করতে বলি এবং অফিসে চলে আসতে নির্দেশ দিই।
গাছ কাটা প্রসঙ্গে রোকন বলেন, আসলে আমার নিকট আত্মীয় হাজী আবুল হোসেন গাছ কাটার জন্য প্রশাসনের কাছে আবেদন করেছিলেন। আমি ভেবেছিলাম তিনি প্রশাসনের অনুমতি পেয়েছেন, তাই গাছ কাটা হচ্ছিল।
তবে আবুল হোসেন ভিন্ন দাবি করে বলেন, আমি ইউএনও অফিসে লিখিত আবেদন করেছিলাম যাতে গাছ পড়ে আমার বাড়ির ক্ষতি না হয়। কিন্তু কোনো অনুমতি পাইনি। পরে জানতে পারি স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা রোকন লোকজন নিয়ে গাছ কাটছে।
গৌরনদী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তরিকুল ইসলাম বলেন, গত ৭ সেপ্টেম্বর রাতে ইউএনও স্যার ফোনে জানালে পুলিশ পাঠিয়ে গাছ কর্তন বন্ধ ও জব্দ করা হয়। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রিফাত আরা মৌরি জানান, গাছ কাটার জন্য একটি আবেদন এসেছে কিন্তু এখন পর্যন্ত অনুমোদন দেওয়া হয়নি। বিষয়টির জন্য ভূমি কর্মকর্তাকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।