1. diggilseba@gmail.com : admin :
  2. ashadul@barisalcrimetrace.com : Ashadul Islam : আসাদুল ইসলাম
  3. hafiz@barisalcrimetrace.com : barisal CrimeTrace : barisal CrimeTrace
  4. mahadi@barisalcrimetrace.com : মাহাদী হাসান : মাহাদী হাসান
ভরা মৌসুমেও বরিশালে ইলিশের আকাল - Barisal Crime Trace । বরিশাল ক্রাইম ট্রেস
বৃহস্পতিবার, ২০ নভেম্বর ২০২৫, ০৫:০৫ অপরাহ্ন
শিরোনাম
নারীর হাতে মার খেয়ে অস্ত্র ফেলে পালাল ৩ ছিনতাইকারী অভ‍্যন্তরীণ ইস্যুতে কোনো দেশের হস্তক্ষেপের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ : দিল্লিতে নিরাপত্তা উপদেষ্টা চরফ্যাশনে চতুর্থ শ্রেণীর ছাত্রীকে ধর্ষণ, যুবক গ্রেপ্তার গৌরনদীতে মাদকবিরোধী অভিযানে ইয়াবা ও গাঁজাসহ চারজন গ্রেপ্তার পুলিশ কর্মকর্তার শরীরে ককটেল নিক্ষেপ হাজিরা দিতে এসে ছাত্রদল নেতা রক্তাক্ত লালমোহনে ইয়াবা ও গাঁজাসহ আটক-৩ বরগুনায় শিক্ষা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা স্কুলছাত্রীকে বিয়ে করলেন শিক্ষক, থানায় গেলেন প্রথম স্ত্রী বাবুগঞ্জ এলজিইডি’র এলসিএস কমিউনিটি অর্গানাইজার সানজিদার বিরুদ্ধে মিথ্যা অপপ্রচার ও হয়রানির অভিযোগ

ভরা মৌসুমেও বরিশালে ইলিশের আকাল

  • আপডেট সময় : শনিবার, ২০ সেপ্টেম্বর, ২০২৫

 

নিজস্ব প্রতিবেদক// বরিশাল বিভাগের উপকূলীয় অঞ্চলে ভরা মৌসুমেও চলছে ইলিশের চরম আকাল। এতে ইলিশ ধরার সঙ্গে জড়িত জেলে-আড়তদারসহ উপকূলের লাখো মানুষের মাঝে দেখা দিয়েছে হতাশা। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে অতিবর্ষণ আর তীব্র খরা-তাপপ্রবাহ এবং সাগর-নদী মোহনায় অসংখ্য ডুবোচর ও অস্বাভাবিক দূষণের কারণে উপকূলজুড়ে চলছে পুরো ভরা মৌসুমেও ইলিশের চরম আকাল।

সরেজমিনে দেখা যায়, ইলিশের রাজ্যখ্যাত সাগর পাড়ের জেলা পটুয়াখালীতে ইলিশের চরম আকাল, দামও আকাশচুম্বী। নাগালের বাইরে ইলিশের দাম থাকায় নিম্ন ও মধ্যবিত্তরা এখন প্রায় রুপালি ইলিশের স্বাদ ভুলতে বসেছেন। বিশেষজ্ঞদের মতে জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব মোকাবিলায় এখনই কার্যকর পদক্ষেপ না নিলে দারুণ প্রভাব পড়বে মৎস্যসম্পদ আহরণের ওপর। কর্মহীন হয়ে পড়বে এই পেশার সঙ্গে জড়িত লাখ লাখ মানুষ।

তথ্যমতে, সাগরের লোনা পানিতে বেড়ে ওঠা একটি মা ইলিশ ১৫ থেকে ২০ লাখ ডিম ধারণ করে প্রজননকালীন পটুয়াখালীর তেঁতুলিয়া, রাবনাবাদ, আগুনমুখা, বুড়াগৌরাঙ্গ, আন্ধারমানিক ও পায়রা-বিষখালীর অভয়াশ্রমে আসতে বাধার সম্মুখীন হয়। আবার ডিম ছাড়া শেষে সাগরে ছুটতেও একই অবস্থার সৃষ্টি হয়। নদ-নদীর মিঠা পানিতে মা ইলিশের পোনা বছরজুড়ে নিধন করা হয় বিভিন্নভাবে। এসব ইলিশের জাটকা পরিপূর্ণ ইলিশ হতে সাগরের লোনা পানিতে যেতে বাধা হয়ে দাঁড়ায় সাগর-নদী মোহনায় জেগে উঠা ডুবোচর ও বাঁধাজাল এবং কারেন্ট জাল। ছোট থাকতেই পোনা ইলিশ মারা পড়ে এসব জালের কারণে। শুধু জাটকা বা ছোট ইলিশই নয়. অন্যান্য প্রজাতিরও বিভিন্ন ধরনের মাছ মারা যায়।

কলাপাড়ার সমুদ্রগামী ফিশিং বোটের একজন মাঝি জানান, ভারত ও মিয়ানমারের পতাকাবাহী শতাধিক অত্যাধুনিক জাহাজ সব সময় সাগরের বাংলাদেশ সীমান্তে অবস্থান করছে। প্রতিটি জাহাজের সঙ্গে রয়েছে ২০ থেকে ২৫টি মাছ ধরার ছোট ট্রলার। ওইসব ট্রলার থেকে যান্ত্রিক উপায়ে এক ধরনের জাল ফেলা হয় সাগরে। এগুলো লাশা জাল নামেও পরিচিত। তিন স্তরের ওই জাল ভেদ করে ছোট-বড় কোনো ইলিশই সাগরের বাংলাদেশ সীমান্তে আসতে পারছে না। ফলে দিন-রাত উত্তাল সাগরে জাল ফেলে মাছ না পেয়ে খালি হাতে তাদের ঘাটে ফিরতে হচ্ছে।

তিনি আরও বলেন, লোকসানে পড়ছেন ট্রলার মালিকসহ উপকূলের জেলেরা। এই কারণে বর্ষার ভরা মৌসুমেও দক্ষিণাঞ্চলের জেলেদের জালে কাক্সিক্ষত ইলিশের দেখা মিলছে না। দিন দিন তারা ঋণগ্রস্ত হচ্ছেন বলেও তিনি জানান। অল্প পরিমাণে মাছ বাজারে পাওয়া গেলেও তার দাম আকাশচুম্বী। বর্তমানে ইলিশ মণপ্রতি বিক্রি হচ্ছে ৭০ হাজার থেকে ১ লাখ ১২ হাজার টাকায়। ফলে কেজি প্রতি দাম দাঁড়াচ্ছে ১ হাজার ৭০০ থেকে ২ হাজার ৮০০ টাকা। এর মধ্যেও যদি দুই কেজি বা তার চেয়ে বড় ইলিশ পাওয়া যায় তাহলে প্রতি কেজিতে দাম আরও বেশি।

পটুয়াখালীর কালাইয়া বন্দরে ইলিশ কিনতে এসেছেন এমন এক ব্যক্তি নাম প্রকাশ না করে বলেন, পারিবারিক একটি অনুষ্ঠানের জন্য এক কেজি ২২ গ্রামের দুটি ইলিশ নিলাম ৪ হাজার ৬০০ টাকায়। তিনি বলেন, এই বাজারে সাত থেকে আট বছর আগেও আষাঢ়-শ্রাবণ মাসে প্রতিদিন মণে মণে ইলিশ উঠত। অথচ এখন ইলিশই নেই। তারপর নানা হাত পেরিয়ে সিন্ডিকেটের কারণে এত বেশি দাম হয় যে, আমাদের ক্রয় ক্ষমতার বাইরে চলে গেছে।

জেলার অন্যতম মহিপুর মৎস্যবন্দর আড়তদার মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক সুমন দাস জানান, অস্বাভাবিক বৃষ্টি ও অতিখরা এবং নদীতে ফেলানো ময়লা সাগরের তলদেশে জমে অক্সিজেনের সমস্যার সৃষ্টি হয়। যার জন্য সাগরের উপরিভাগে মাছের বিচরণ কমে যাওয়ায় তীরে ইলিশ খুবই কম আসছে। মূলত এসব কারণেই ইলিশের এত সংকট দেখা দিয়েছে।

সাগর পাড়ের উপজেলা কলাপাড়ার সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা অপু সাহা বলেন, জলবায়ু পরিবর্তন ও আবহাওয়ার বিমাতাসূলভ আচরণ, জেলেদের ইলিশ শিকারের আধুনিক সরঞ্জামাদির অভাব, সাগরের ৩০ থেকে ৪০ কিলোমিটার এলাকায় ডুবোচর, নাব্য সংকট ও পলিউশন সমস্যার কারণে ইলিশের মাইগ্রেশন হচ্ছে না। সাগরে ইলিশের সহজলভ্যতা নিশ্চিতে স্টক ও মাইগ্রেশন রুট নিয়ে গভীরভাবে গবেষণা করতে হবে।

পটুয়াখালীর রাঙ্গাবালী উপজেলার জেলে সুমন বলেন, ‘সাগরে চাহিদামতো মাছ পাওয়া যাচ্ছে না। এখন এক একটি বোট নিয়ে সাগরে যেতে ন্যূনতম পাঁচ লাখ টাকার মালামাল প্রয়োজন হয়। সেই টাকা উঠবে কি না তার নিশ্চয়তা না থাকায় হতাশ ইলিশ আহরণের সঙ্গে জড়িতরা।

মহিপুর ও আলীপুর মৎস্যবন্দর ঘুরে দেখা গেছে, ৪০০ গ্রাম সাইজের প্রতিমণ ইলিশের দাম ৬৮ থেকে ৭০ হাজার টাকা, ৮০০ থেকে ৯০০ গ্রাম সাইজের প্রতিমণ ইলিশ এক লাখ টাকা, এক কেজির বেশি সাইজের প্রতিমণ ইলিশ ১ লাখ ৮ থেকে ১ লাখ ১২ হাজার টাকায় বিক্রি করছে। অন্যদিকে বড় আকারের ইলিশের দাম গত ১০ দিনের ব্যবধানে মণপ্রতি ১২ থেকে ৩০ হাজার টাকা পর্যন্ত বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে।

পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে মৎস্য অনুষদের ডিন প্রফেসর ড. সাজেদুল হক জানান, ‘ইলিশ কম পাওয়ার কারণ হিসেবে জলবায়ুর প্রভাব তো আছেই, তারপর সাগরে অতিরিক্ত লবণাক্ততা, সমুদ্রের উষ্ণতা বৃদ্ধি, অসংখ্য ডুবোচর, নদীর নাব্য হ্রাস, অবৈধ জালের ব্যবহারের ফলে সাগরের মাছ ইলিশের নদীতে এসে মাইগ্রেন দারুণভাবে বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। এর কারণেই আজ ইলিশের এই দুষ্প্রাপ্যতা।’

এ বিষয়ে জেলা মৎস্য কর্মকর্তা কামরুল ইসলাম জানান, আবহাওয়া পরিবেশ, প্রতিবেশ সবকিছু অনুকূলে থাকলে চলতি অর্থবছরেও ৭২ থেকে ৮০ হাজার মেট্রিক টন ইলিশ আহরণের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করা সম্ভব হবে।

পোস্টটি সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

এই ক্যাটাগরির আরও নিউজ
© All rights reserved © 2025 Barisal Crime Trace
Theme Customized By Engineer BD Network